১৭ বার ফেল করা ছাত্র জ্যাক মা’র বিশ্ববিখ্যাত ব্যবসায়ী হওয়ার গল্প

১৭ বার ফেল করা ছাত্র জ্যাক মা’র বিশ্ববিখ্যাত ব্যবসায়ী হওয়ার গল্প

দি প্রমিনেন্ট ডেস্ক: ‘জীবন যেন একটি চকলেটের বাক্স। তুমি কখনোই জানতে পারবে না যে কী পেতে যাচ্ছ।’— বিশ্বখ্যাত হলিউড অভিনেতা টম হ্যাঙ্কসের ফরেস্ট গাম্প চলচ্চিত্রের এই সংলাপটি চীনা ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আলিবাবার প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক মার ভীষণ প্রিয়। শুধু প্রিয়ই নয়, জ্যাক মা’র জীবনের পরোতে পরোতে যেন এই সংলাপের প্রতিফলন। কারণ বহু ব্যর্থতার পর আকাশ ছোয়া সাফল্যের যে নজির বিশ্বের ৩৩তম ধনী এই ব্যবসায়ী স্থাপন করেছেন, তা এই সংলাপের মধ্যেই লুকায়িত।

অনলাইন কেনাকাটা সম্পর্কে যারা জানেন, তাঁদের কাছে জ্যাক মা বর্তমান বিশ্বের সফলতম ব্যবসায়ী ও শীর্ষ ধনীদের একজন। অথচ এই মানুষটাই একটা লম্বা সময় ধরে ব্যর্থতার পর ব্যর্থতার হিসাব মিলিয়েছেন। সুইজারল্যান্ডের দাভোসে অনুষ্ঠিত বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামে সম্মেলনের সময়ে দেওয়া এক টিভি সাক্ষাৎকারে জ্যাক মা’র নিজেই তাঁর অতীত জীবনের যাবতীয় ব্যর্থতা এবং ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প বলেন।
চলুন জেনে নি জ্যাক মা’র সেসব ব্যর্থতার গল্প: জীবনে প্রথম প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় জ্যাক মা দুইবার ফেল করেন। জীবনের প্রথম পদক্ষেপেই ব্যর্থতা ঘিরে ধরে তাঁকে। মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ব্যর্থতার সংখ্যা আরও বেশি, এখানে তিনবার ফেল করেছেন। তারপর পুলিশের চাকরির জন্য আবেদন করে প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন।

আর্নল্ড শোয়ার্জনেগারের সাথে জ্যাক মা
আর্নল্ড শোয়ার্জনেগারের সাথে জ্যাক মা

শিক্ষা জীবনে এতসব ব্যর্থতা থাকলেও জ্যাক মা’র স্বপ্ন ছিল বড়। তিনি বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয় হার্ভার্ডে পড়াশোনার স্বপ্ন দেখেন। চেষ্টাও করেন, কিন্তু যথারীতি ব্যর্থ হন। তবুও দমে যাননি তিঁনি। চেষ্টা করেছেন বারবার; একবার-দুবার নয়, দশ-দশবার আবেদন করেছেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে। কিন্তু সাফল্যের সোনার হরিণ দেখা দেয়নি। তবে একটি জেদ জেঁকে বসেছিল তাঁর মাথায় তিঁনি বলেন: ‘তখন আমার মনে হয়েছিল, একদিন হয়তো সেখানেই আমি পড়াতে যাব।…আর সেটি খুবই সম্ভব।’

হার্ভার্ডের মতো বিশ্বসেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া না হয় জ্যাক মা’র জন্য দুঃসাধ্য ব্যাপার, তাই বলে ফাস্টফুডের দোকানে একটা চাকরি জোঠানোও কী খুব কঠিন? জ্যাক মা বলেন, ‘কেএফসি যখন আমাদের শহরে ব্যবসা করতে এলো, তখন ২৪ জন তাঁদের কাছে চাকরির জন্য গিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে আমিও ছিলাম। কিন্তু কেএফসি বাকি ২৩ জনকে চাকরি দেয়, বাদ পড়েছি শুধু আমি।’

জীবনব্যাপির এতএত ব্যর্থতার পরও দমে যাননি জ্যাক মা। বিজয়ের হাসিটা তিনি হেসেই ছেড়েছেন।
সাক্ষাৎকারে জ্যাক মা আরও জানান, একপর্যায়ে এমনকি তিনি নিজের নামটাও পাল্টে ফেলেন। এক বন্ধুর পরামর্শে মা ইয়ান থেকে তিনি ধারণ করেন নতুন নাম, জ্যাক মা।

এনডিটিভি অবলম্বনে সংক্ষেপিত অনুবাদ।

Sharing is caring!

Leave a Comment