সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার পক্ষে ড. জাফর ইকবাল

সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার পক্ষে ড. জাফর ইকবাল

  • ক্যাম্পাস ডেস্ক

জনপ্রিয় লেখক ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি কার্যক্রম হলো শিক্ষকদের অর্থ উপার্জনের একটি মাধ্যম। মূলত শিক্ষকরা যাতে বেশি অর্থ নিতে পারেন সেজন্য প্রতি বছর ভর্তি ফরমের দাম বৃদ্ধি করা হয়। যেটা আমি কখনোই সমর্থন করি না। শাবিপ্রবিতে ভর্তি ফরমের বর্ধিত দাম প্রত্যাহারের দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নিয়ে কথা বলতে গিয়ে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। তিনি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে যৌক্তিক দাবি করে এটা সমর্থন করেন। পাশাপাশি আন্দোলন সফল হবে কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।

তিনি বলেন, একজন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী যখন পরীক্ষা দিতে যান সেক্ষেত্রে তাকে শারীরিকভাবে উপস্থিত হতে হয়। যদি সঙ্গে কোনো অভিভাবক থাকে তাহলে যাতায়াতসহ অনেক খরচ হয়। তাই তিনি সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার পরামর্শ দেন। এ পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেয়া হলে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি অনেক কমবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। এই পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীরা একটি নির্দিষ্ট কেন্দ্রে বসে একই সঙ্গে বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য পরীক্ষা দিতে পারবে।

আসন্ন ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে শাবিপ্রবিতে নির্ধারিত ফরমের দাম ১০০০-১২০০ টাকাকে অনেক বেশি উল্লেখ করে ড. জাফর ইকবাল বলেন, বাংলাদেশের সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা দেয়ার রাষ্ট্রীয় অধিকার রয়েছে। কিন্তু ফরমের অধিক দাম ও আলাদা আলাদা পরীক্ষা নেয়ার কারণে অনেক শিক্ষার্থী বঞ্চিত হচ্ছে। আমি মনে করি এ ব্যবস্থাটার একটা পরিবর্তন হওয়া দরকার।

ভর্তি পরীক্ষা থেকে আয় করা অর্থ কোনো খাতে খরচ করা হয় তা সবার সামনে প্রকাশ করা হয় না। এটি শুধু শাবিপ্রবি নয় বরং বাংলাদেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটছে। আমি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার চিঠি লিখেছি টাকাগুলো কোন খাতে খরচ হচ্ছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ কিছুই জানায়নি। তিনি তথ্য অধিকার আইনের মাধ্যমে সাংবাদিকদের এসব বিষয় খোঁজ নিতে অনুরোধ করেন।

ভর্তি ফরমের দাম কত টাকা হলে ভালো হয় সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ড. জাফর বলেন, আগের ভর্তি পরীক্ষার মূল খরচের দিকে তাকালে তারা (ভর্তি কমিটি) বলতে পারবেন আসলে খরচ কত লাগতে পারে? যেহেতু এসএমএস পদ্ধতির মাধ্যমে ভর্তির আবেদন নেয়া হয় সেক্ষেত্রে আগের পেপার পদ্ধতির চেয়ে খরচ অনেক কম হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।

ভর্তি পরীক্ষা সম্পাদনের জন্য গঠিত উপকমিটির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন জাফর ইকবাল। তিনি বলেন, এসব উপকমিটি করা হয় মূলত বিভিন্ন শিক্ষক-কর্মকর্তাদের স্থান দেয়ার জন্য। যাতে করে কাজ না করেও অর্থ নিতে পারেন তারা। ভর্তি ফরমের দাম বাড়ানোকে অযৌক্তিক দাবি করে তিনি নিজেই লজ্জিত  বলেন, সুযোগ থাকলে আমি এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতাম।

প্রসঙ্গত, শাবিপ্রবিতে ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি ফরমের বর্ধিত দাম প্রত্যাহারের দাবিতে গত দুইদিন ধরে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে ‘ভর্তি ফরমের মূল্যবৃদ্ধি বিরোধী শিক্ষার্থী মঞ্চ’র ব্যানারে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। favicon59-4

Sharing is caring!

Leave a Comment