ক্যাম্পাস স্টার মৃন্ময়ী

ক্যাম্পাস স্টার মৃন্ময়ী

  • ক্যাম্পাস ডেস্ক

মৃন্ময়ী দাসের কোন গুণটির কথা আগে বলা যায়—কারুশিল্পী, সংগীতশিল্পী, নাকি আঁকিয়ে? ক্যাম্পাসের সহপাঠী, ছোট-বড় ভাইবোনেরা তাঁকে ভিন্ন ভিন্ন পরিচয়ে চেনেন। তবে হ্যাঁ, এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের তৃতীয় বর্ষের এই শিক্ষার্থীকে সবাই চেনেন তিথি নামে।

সংগীতের কথাই আগে বলা যাক। কেননা মৃন্ময়ীর দাবি, গান তাঁর মন ভালো করার ওষুধ। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন আয়োজনে গানের মানুষ হিসেবে পাওয়া যায় তাঁকে। এই গান শেখার শুরু সেই ছোট্টবেলায়। মঞ্চের সঙ্গে পরিচয়ও সেই সময় থেকে। ময়মনসিংহের মেয়ে মৃন্ময়ী সেখানকার শিশু একাডেমীতে লোকসংগীত শিখতেন। এখন রবীন্দ্রসংগীত শিখছেন ঢাকার ছায়ানটে। মৃন্ময়ীকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, রবীন্দ্রসংগীত কেন? ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতি ভালোবাসা থেকেই রবীন্দ্রসংগীত শেখা।’ আরও জানালেন, রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে সমালোচনা তিনি একেবারেই সহ্য করতে পারেন না। ‘কেউ রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে নেতিবাচক কিছু বললে আমার মেজাজ খারাপ হয়ে যায়। এ নিয়ে অনেকের সঙ্গে ঝগড়াও হয়েছে।’ বলেন মৃন্ময়ী। বোঝা গেল, রবিঠাকুরের তিনি অন্ধভক্ত। রবীন্দ্রনাথের লেখা ‘সমাপ্তি’ গল্পে নায়িকার নাম ছিল মৃন্ময়ী। গল্পটা আমাদের মৃন্ময়ী বারবার পড়েন কি না, তা অবশ্য জানা হয়নি!

মৃন্ময়ীর অবসর সময় কাটে বই পড়ে বা সিনেমা দেখে। সেটাও রবীন্দ্রনাথ-সম্পর্কিত হলে নাকি আগ্রহ বেশি থাকে। সুযোগ পেলে ক্যামেরা হাতে ছবি তুলতে বেরিয়ে পড়েন। তাঁর আরও পছন্দ ছবি আঁকা। মৃন্ময়ী শুধু যে ক্যানভাসে ছবি আঁকেন, তা নয়। ছবি আঁকেন পোশাকেও।

স্থাপত্যে পড়েন বলে বিভিন্ন নকশা তৈরির কাজে প্লাইউড, কেরোসিন কাঠ, প্লাস্টিক উড ব্যবহার করতে হয়। কিন্তু কাজ শেষ হলে ছোটখাটো টুকরোগুলো তিনি ফেলে দেন না। সেগুলো দিয়ে তৈরি করেন গয়না। কাঠের গয়না। আগে এই গয়না শুধু নিজে পরতেন। এখন তাঁর তৈরি গয়না বন্ধুরাও পরেন। অনলাইনে নিজের তৈরি গয়না বিক্রিও করেন মৃন্ময়ী।

তাঁর তৈরি কিছু পণ্যের কথাও বলা যাক। জামা, টি-শার্ট, পাঞ্জাবি, শাড়ি, ব্যাগের ওপর বিভিন্ন রং-নকশা করেন তিনি। শুরুটা কীভাবে হয়েছিল? এমন প্রশ্নে মৃন্ময়ীর উত্তর, ‘একটা ডিজাইনের কাজের পর প্লাইউডের উচ্ছিষ্ট রং করে নিজের জন্য গয়না বানিয়েছিলাম। এরপর বন্ধুরা সেটা পছন্দ করল। আবদার করল, তাদেরও বানিয়ে দিতে হবে। করে দিলাম। আরেকবার মজা করেই একটা শাড়িতে রিকশা পেইন্ট করেছিলাম। এরপর থেকে বিভিন্ন জামাকাপড়েও পেইন্ট করার আবদার আসে। বন্ধুদের পরামর্শেই একটা ফেসবুক পেজ খুলে ফেলি। ওখানেই এখন অর্ডার আসে।’ জানালেন, নৈর্ঋতা নামে একটি ফেসবুক পেজ আছে তাঁর। হাতে তৈরি পণ্যগুলো এই ফেসবুক পেজের মাধ্যমেই বিক্রি হয়।

ময়মনসিংহের বিদ্যাময়ী সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় মাধ্যমিক ও মুমিনুন্নিসা সরকারি মহিলা কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করে ঢাকায় এসেছিলেন ডাক্তারি পড়ার ইচ্ছায়। এখন পড়ছেন স্থাপত্যে। আর ভবিষ্যতে স্থাপত্যের পাশাপাশি গান নিয়ে থাকতে চান। সেই সঙ্গে নৈর্ঋতাকে দিতে চান প্রাতিষ্ঠানিক রূপ।favicon59-4

Sharing is caring!

Leave a Comment