চার বন্ধুর দারুণ উদ্যোগ

চার বন্ধুর দারুণ উদ্যোগ

  • ক্যাম্পাস ডেস্ক

পথের শিশুদের স্বপ্ন পূরণ করতে ‘ড্রিম মোমেন্ট’ তিন দিন সাধারণ মানুষের ছবি তুলেছে ঢাকার রমনা পার্কে। তারপর কী হলো?


তাঁরা চারজন—সাঈদ মেহেদী হাসান, শোভন হাবিব, সাঈদ হাসান ও আসিফ রাহাত। পড়েন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে। তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটোগ্রাফি ক্লাবের সঙ্গেও যুক্ত আছেন। তাঁদের অনলাইনভিত্তিক ফটোগ্রাফি গ্রুপের নাম হলো ‘ড্রিম মোমেন্ট’ (https://www.facebook.com/DreamMoment.BD)। ২০১৫ সালের ১৩ নভেম্বর যাত্রা করা ‘ড্রিম মোমেন্ট’ অনেক কাজ করেছে। বিয়ে, জন্মদিন, করপোরেট অনুষ্ঠানের ছবি তুলেছে; ‘জাগো’র বঞ্চিত শিশুদের লেখাপড়ার ওপর বিনা পারিশ্রমিকে ছবি তুলছে। গিয়েছে ঢাকার বনানী, রায়েরবাজার, চট্টগ্রাম, টেকনাফ ও বান্দরবানে। হঠাৎ করেই এবারের রোজার শুরুতে মেহেদীর মনে হলো, ছবি তুলে গরিব শিশুদের ঈদের পোশাক দিলে কেমন হয়? চার বন্ধু মিলে ফেসবুকে একটি ইভেন্ট পেইজ খুলে প্রচারণাও চালালেন। বললেন, ৮ থেকে ১০ জুন সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত নানা বয়সের মানুষের ছবি তুলব আমরা। খুশি হয়ে যে যা দেবেন সেটিই নেব। সেই টাকায় পথশিশুদের ঈদের পোশাক কিনে দেওয়া হবে।

কেমন ছিল সেই অভিজ্ঞতা? সাঈদ বললেন, ‘আমরা অবাক হয়ে গেছি। এমনও মানুষ আমাদের কাছে ছবি তুলেছেন, যাঁদের ছবি তোলার কোনো শখই নেই। তার পরও তাঁরা শুধু পথশিশুদের সাহায্য করার জন্য ছবি তুলেছেন!’ আসিফ বললেন, ‘আমরা রমনার পথশিশু, ফুলশিশুদেরও ছবি তুলেছি।’ এ আয়োজনে ছবি তোলার জন্য কোনো নির্ধারিত ফি ছিল না। কেউ ছবি তুলে ১০০, কেউ ৫০০, আবার কেউ পাঁচ হাজার টাকাও দিয়েছেন।

জগন্নাথের চাঁদনী ও তাঁর বান্ধবীরা ছবি তুলেছেন। চাঁদনী বললেন, ‘ভাইয়ারা আমাদের খুব ভালো ছবি তুলেছেন।’ তাঁরা দিয়েছেন হাজার টাকা। মঈন নামের এক ভদ্রলোক পরিবার নিয়ে ছবি তুলেছেন। তাঁদের নানা ভঙ্গিতে ছবি তোলা হয়েছে। পরে তাঁরা তিন হাজার টাকা দিয়েছেন। ঢাকা কলেজের শুভ ও তাঁর বন্ধু ছবি তুলে জমানো ৩০০ টাকা দিয়েছেন। টানা তিন দিন ছবি তুলে ২০ হাজার টাকা পেয়েছেন তাঁরা। সেই টাকায় ৬০ জন পথশিশুর জন্য ঈদের পোশাক কিনেছেন। ১৫ জুন সব জামা নিয়ে গেছেন পলাশীর মোড়ে। ফুটপাত, বস্তির শিশুদের মধ্যে ঈদের পোশাক বিতরণ করেছেন। শিশুরা এত খুশি হয়েছে যে তাদের কাছ থেকে জামা নেওয়ার জন্য টানাটানি করছিল—হাসিমুখে বললেন শোভন। ফাতেমা নামের একটি ছোট্ট মেয়ে সালাম দিয়ে খুশি হয়ে বলল, ‘থ্যাংক ইউ। ’ ঈদের পোশাক দেওয়ার সময়ও তাদের ছবি তুলেছেন এই চার ফটোগ্রাফার।favicon59-4

Sharing is caring!

Leave a Comment