পড়তে যাই রাশিয়া

পড়তে যাই রাশিয়া

মারুফ ইসলাম : সম্প্রতি রাশিয়া সরকার মেধাবী বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা বৃত্তি ঘোষণা করেছে। বিভিন্ন বিষয়ে পঞ্চাশ জনেরও বেশি বাংলাদেশী শিক্ষার্থীকে অনার্স, স্পেশালিষ্ট ও মাস্টার্স কোর্সে বৃত্তি প্রদান করবে। বৃত্তির জন্য আবেদনের শেষ তারিখ ৩১ মার্চ ২০১৬।

যোগ্যতা

  • ব্যাচেলর বা স্পেশালিষ্ট কোর্সের বৃত্তির জন্য আবেদন প্রার্থীকে অবশ্যই এসএসসি ও এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় নূন্যতম প্রথম শ্রেণী পেতে হবে। মাস্টার্স কোর্সের জন্য এসএসসি ও এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণী এবং অনার্স পরীক্ষায় নূন্যতম দ্বিতীয় বিভাগ থাকা অত্যাবশ্যক।

আবেদন প্রক্রিয়া

  • প্রথমে শিক্ষার্থীদের সকল সার্টিফিকেট ও মার্কশীট সত্যায়িত করতে হয় যথাক্রমে শিক্ষাবোর্ড/ বিশ্ববিদ্যালয় , শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে। পরবর্তীতে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের সকল কাগজপত্র রুশ ভাষায় অনুবাদ করে রাশিয়ার দূতাবাস থেকে সত্যায়িত করতে হয়। একই সাথে পাসপোর্ট ও জন্ম সনদের ইংরেজি কপিও রুশ ভাষায় অনুবাদ ও সত্যায়িত করতে হবে। শেষ ধাপে সমস্ত কাগজের নূন্যতম চার কপি নোটারী করতে হবে। এ ছাড়া মেডিকেল সার্টিফিকেট প্রয়োজন—যাতে আপনার জটিল কোনো রোগ ব্যাধি নেই তা প্রমাণের জন্য। এবার আপনার সমস্ত কাগজপত্র মোটামুটি তৈরি।

নির্বাচন প্রক্রিয়া

  • সর্বোচ্চ জিপিএর ভিত্তিতে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের মৌখিক ও ক্ষেত্রবিশেষে প্রয়োজনে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত করা হয়। তারপর ঢাকাস্থ রাশিয়ার দূতাবাস চূড়ান্তভাবে শিক্ষার্থীদের নির্বাচিত করে থাকে। ক্ষেত্রবিশেষে, নির্বাচন প্রক্রিয়ার ধরণ পরিবর্তনও হতে পারে।
রাশিয়ার ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি’র ক্যাম্পাস। ছবি : বাস্টলার ডটনেট।
রাশিয়ার ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি’র ক্যাম্পাস। ছবি : বাস্টলার ডটনেট।

সুযোগ-সুবিধা

  • স্কলারশিপ শুধুমাত্র একজন শিক্ষার্থীকে অবৈতনিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সুযোগে প্রদান করে। তাছাড়া প্রয়োজনীয় বই বিনামূল্যে ফেরতযোগ্য ও পরীক্ষার ফি প্রদান করতে হয় না। কিন্তু জীবনযাপন, হেলথ – ইনস্যুরেন্স ও অন্যান্য খরচ শিক্ষার্থীকেই বহন করতে হয়। জীবনযাত্রার খরচ তুলনামূলক কম। বাংলাদেশী টাকায় আট-দশ হাজার টাকায় স্বাচ্ছন্দে জীবনযাপন করা যায়। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নামমাত্র মূল্যে আবাসন প্রদান করা হয়। বিদেশি শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার দিয়ে উন্নত ও নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থায় আবাস প্রদান করে থাকে। বলে রাখা দরকার, এখানে একজন মেয়ে শিক্ষার্থী বাংলাদেশ থেকে অধিক নিরাপত্তা, অগ্রাধিকার ও সম্মান পেয়ে থাকে। প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হাত খরচ বাবদ কিছু বৃত্তি প্রদান করা হয়। তাতে টুকিটাকি খরচ চলে যায়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল রাশিয়াতে বিদেশী শিক্ষার্থীদের কাজের সুযোগ একেবারে নেই বললেই চলে।

কোর্স-কারিকুলাম

  • সেপ্টেম্বরের শুরুতে ঐতিহ্য ও রীতি অনুসারে শিক্ষাবর্ষ শুরু হয়। বৃত্তি প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের প্রথমে একবছর  রুশ ভাষায় পড়ার জন্য প্রস্তুতিমূলক কোর্স সম্পন্ন করতে হয়। এ সময় রুশ ভাষা, রুশ ভাষায় পদার্থ, গণিত, রসায়ন ও অন্যান্য বিষয়ে শিক্ষা প্রদান করা হয়। প্রস্তুতিকোর্স সম্পন্ন হলেই মূল কোর্সে শিক্ষার্থীদের রুশ ভাষায় পাঠ্যক্রম শুরু হয়।

যোগাযোগ

  • সম্পূর্ণ তদারকি, প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা, তথ্য ও সার্বিক সহযোগিতা এবং ভিসার অন্য্যন্য সকল কার্য সম্পাদনের জন্য ঢাকাস্থ রাশিয়ান বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র আপনাদের অপেক্ষায় রয়েছে। কেন্দ্রটি রোড নং– ১০, ভাষা সৈনিক আব্দুল মতিন সড়ক, ধানমন্ডিতে অবস্থিত। রাশিয়া সরকারের বিজ্ঞান ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়য়ের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করে থাকে এই প্রতিষ্ঠান।

এখনই সময় প্রস্তুতি সম্পন্ন করার। বৃত্তির জন্য আবেদনের শেষ তারিখ ৩১ শে মার্চ ২০১৬।favicon594

Sharing is caring!

Leave a Comment