প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ শিখুন

প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ শিখুন

  • ক্যারিয়ার ডেস্কঃ 

কেন প্রোগ্রামিং? 
কেন প্রোগ্রামিং এর উত্তর দেওয়ার আগে একটা প্রশ্ন করা যাক, কেন প্রোগ্রামিং নয়?
আচ্ছা, কেমন হত যদি না কম্পিউটার থাকত? যদি না ইন্টারনেট থাকত? যদি না ফেসবুক থাকত? আর যদি গুগল না থাকত তাহলে কি হতো? কিভাবে আমরা আমাদের এসাইনমেন্ট গুলো খুজে বের করতাম?

গেমস, কম্পিউটার সফটওয়ার, মোবাইল এপলিকেশন, ওয়েব পেইজ যাই হোক না কেন সব জাগায় প্রোগ্রামিং। এটা তো কম্পিউটার বা কম্পিউটার রিলেটেড। অন্য কিছুর দিকে যদি তাকিয়ে দেখি, গাড়ি, এরোপ্লেন, মহাকাশ যান, মেডিকেল ডায়াগনসিস মেশিন, মাইক্রোওয়েব ওভেন, লিফট, গড়ি, ক্যালকুলেটর সহ সকল ইলেক্ট্রনিক্স যন্ত্রতেই প্রোগ্রামিং এর ব্যবহার রয়েছে।

মানুষ নিজেদের ভাষা ব্যবহার করে একজন আরেক জনের সাথে যোগাযোগ করার জন্য। মেশিনের সাথে মানুষের যোগাযোগ করার জন্য ও একটা ভাষা দরকার, সে ভাষা হচ্ছে প্রোগ্রামিং। মেশিনের সাথে যোগাযোগ, এক্সাইটিং না?

প্রোগ্রামিং জানাটা এক্সাটিং থেকেও আরো বেশি কিছু।

বুঝাই যাচ্ছে প্রোগ্রামিং কত গুরুত্ব পূর্ন। এক এক জাগায় এক এক ধরনের কাজ কর্ম করতে হয়। কাজ করার পদ্ধতি ভিন্ন, তাই প্রোগ্রাম গুলো ও ভিন্ন। আবার এই ভিন্ন ভিন্ন প্রোগ্রাম তৈরি করার জন্য রয়েছে অনেক গুলো প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ। এখানে একটূ ক্লিক করে দেখলেই হবে কত গুলো প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ রয়েছে।

এত গুলো প্রোগ্রামিং থাকতে সি কেন?
সি হচ্ছে অন্য সকল প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ এর ব্যাসিক। এটি খুবি সহজ একটা প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ। সি থেকেই পরবর্তীতে অনেক গুলো পোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ এর উৎপত্তি হয়েছে। যেমন C++, Java, C#, PHP ইত্যাদি। সি জানলে সে গুলো সহজেই জানা যায়।

প্রোগ্রামিং এর মৈলিক সকল বৈশিষ্ট গুলো সিতে রয়েছে। সকল প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ এ মৈলিক বৈশিষ্ট গুলো ফলো করে।
কম্পিউটার অপারেটিং সিস্টেমের কোর বা প্রান হচ্ছে কার্নেল। Windows, Unix বা Linux এর কার্নেলের বেশির ভাগ কোড লেখা হয়েছে সি দিয়ে। কেউ যদি সি ভালো পারে, নিজের একটা অপারেটিং সিস্টেম তৈরি করার স্বপ্ন সহজেই দেখতে পারে।

নতুন নতুন ডিভাইস গুলোর জন্য ড্রাইভার লাগে। এ ড্রাইভার সফটওয়ার গুলো প্রায় সময়ই সি প্রোগ্রামিং দিয়ে লেখা। কারন সি এর পয়েন্টার দিয়ে হার্ডওয়ার এবং সফটোয়ার এর মধ্যে যোগাযোগ করা যায়।

সি হচ্ছে middle level language। তিন প্রকার প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ রয়েছে। High Level, Middle Level & Low Level. High Level ল্যাঙ্গুয়েজ দিয়ে ইউজার ব্যবহার করে এমন প্রগ্রাম গুলো তৈরি করা হয়। Low Level প্রোগ্রামিং দিয়ে সফটোয়ার এবং হার্ডওয়ার এর মধ্যে যোগাযোগের কাজ করা হয়। আর সি হচ্ছে High Level এবং Low Level এর মিশ্রনে তৈরি। যা দিয়ে দুই কাজই করা যায়।

আরো অনেক গুলো কারন রয়েছে কেন সি প্রোগ্রামিং শেখা জরুরী

প্রোগ্রামিং করার জন্য দরকার একটা কম্পিউটার আর একটা কম্পাইলার। দুইটার মধ্যেই কি সদৃশ্য তাই না? দুটাই ক দিয়ে শুরু এবং ম্প যুক্ত বর্ণ রয়েছে।
আপনার একটা কম্পিউটার রয়েছে তা না হলে তো এ লেখাটা পড়তে পারতেন না, তাই না? এবার দরকার একটা কম্পাইলার। একটা সি কম্পাইলার। যে আমাদের কোড প্রোগ্রামিং এর কোড গুলোকে কম্পাইল করে দিবে।

কম্পাইলার কেন দরকার তা বলছি আগে। আমাদের আমরা যা লিখি কম্পিউটার তা পড়তে পারে না । কম্পিউটারের জন্য দরকার মেশিন ল্যাঙ্গুয়েজ। আমাদের সি প্রোগ্রামিংকে মেশিন ল্যাঙ্গুয়েজে পরিবর্তন করে দেয় এই কম্পাইলার। কম্পাইলার সম্পর্কে আরেকটু ধারনা নেওয়ার জন্য এ লেখাটা দেখা যেতে পারে। কম্পাইলার এবং IDE এবং এদের মধ্যে পার্থক্য

আমরা সি কোড লেখা ও কম্পাইল করার জন্য CodeBlocks IDE ব্যবহার করব । CodeBlocks ডাউনলোড করতে চাইলে নিচের লিঙ্ক এ গিয়ে codeblocks-12.11mingw-setup_user.exe টি ডাউনলোড করে নিন।

http://www.codeblocks.org/downloads/binaries

তারপর ইন্সটল করুন। ওপেন করুন। তাহলে নিচের মত দেখতে পারেব।

figure 1
ইন্সটল হলে আপনি কোড লেখার জন্য প্রস্তুত।

এখান থেকে Create New Project এ ক্লি করুন।
figure 2
এখান থেকে Console Application সিলেক্ট করে Go তে ক্লি করুন।
figure 3
এবার C সিলেক্ট করে Next এ ক্লিক করুন। Project Title বক্স এ আপনার প্রজেক্ট এর নাম দিন। যেমন hello. Folder to create project in বক্স থেকে আপনার প্রজেক্টটি কোন ফোল্ডারে সেভ করতে চান তা সিলেক্ট করুন। Next এ ক্লি করুন। এবার Finish এ ক্লি করুন।

এবার ডান পাশে আপনার workspace দেখতে পাবেন। ঐখানে আপনার প্রোজেক্ট গুলো দেখাবে। hello এর + চিহ্নতে ক্লিক করুন। তারপর Source এর + চিহ্নতে ক্লিক করুন এবং main.c এর উপর ক্লিক করুন। CodeBlocks একটা সিম্পল একটা কোড টেমল্পলেট তৈরি করে প্রতি প্রজেক্টের জন্য, তা দেখাবে। যার মধ্যে লেখা থাকবেঃ

#include<stdio.h>
int main()
{
printf("Hello world!");
return 0;
}

আমাদের কোডটি কম্পাইল এবং রান করতে হবে তার জন্য ফাইল মেনু থেকে Build এ ক্লিক করুন এবং Build and Run এ ক্লিক করুন। তাহলে আপনার সি প্রোগ্রামটি কম্পাইল হবে এবং রান হবে। এবং নিচের মত আউটপুট দিবেঃ

figure 5

আপনি যদি উপরের প্রোগ্রামটি রান করাতে পারেন, তাহলে আপনাকে অভিনন্দর এবং স্বাগতম প্রোগ্রামিং এর মজার দুনিয়াতে। না করতে পারলে মন খারাপ করার দরকার নেই। আবার একটু চেষ্টা করুন প্রথম থেকে। তাহলেই হবে।

উপরের কোডে আমরা কি লিখছি তা এবার একটু ব্যাখ্যা করা যাক।

আমাদের প্রোগ্রামের প্রথম লাইন হচ্ছে #include<stdio.h> । include মানে হচ্ছে কোন কিছু যুক্ত করা। stdio এর পূর্নরুপ হচ্ছে standard input output. stdio.h এর .h দিয়ে বুঝানো হয় এটা একটা header ফাইল। আর পুরোলাইন দিয়ে বুঝানো হয় যে standard input output কে যুক্ত কর। standard input output সম্পর্কে আরেকটু পরে বলব।

এর পরের লাইন হচ্ছে int main(), এটিকে বলা হয় মেইন ফাংশন। আমরা যখন প্রোগ্রামটি রান করাবো তখন এ মেইন ফাংশন থেকে কাজ করা শুরু করবে। তাই সব প্রোগ্রামে একটি (এবং কেবল একটি) মেইন ফাংশন থাকতে হয়। মেইন ফাংশনের শুরুতে দ্বিতীয় বন্ধনী দিয়ে শুরু করতে হয়। মেইন ফাংশন শেষও করতে হয় একটি দ্বিতীয় বন্ধনী দিয়ে।

মেইন ফাংশন এর দ্বিতীয় বন্ধনী এর ভেতর প্রথম লাইন লিখছি আমরা printf(“Hello world!”);

এখানে printf() হচ্ছে একটি ফাংশন। printf এর মানে হচ্ছে print formatted। এটি একটি লাইব্রেরী ফাংশন যাকে স্ট্যান্ডার্ড আউপুট ফাংশন বলে। printf() এর কাজ হচ্ছে কনসোলে/স্ক্রিনে কিছু প্রিন্ট করা। ডবল কোটেশন চিহ্নের ভেতরে আমরা যা লিখব তা-ই স্ক্রিনে সে প্রিন্ট করবে। আমরা প্রথমেই যে একটি লাইন লিখছি #include । printf() ফাংশনটি কিভাবে কোন কিছু প্রিন্ট করে তা লেখা রয়েছে এই stdio.h ফাইলে।

এর পর আমরা আরেকটি লাইন লিখছি return 0; আমরা বলছি যে main হচ্ছে একটা ফাংশন। প্রত্যক ফাংশন এর একটা return মান থাকতে হয়। যা ফাংশন এর কাজ শেষে যে রিটার্ন করে। return 0 মানে শূন্য রিটার্ন করা। এ সম্পর্কে পরে আরো বিস্তারিত জানা যাবে যখন আমরা ফাংশন নিয়ে পড়ব।

printf(“Hello world!”); বা return 0; এ গুলোকে বলে স্টেটমেন্ট (Statement)। প্রতিটি স্টেটমেন্টের শেষে একটি করে সেমিকোলন (;) দিতে হয়। আমরা যদি সেমিকোলন না দিয়ে থাকি তাহলে কম্পাইলারে ভুল দেখাবে এবং প্রোগ্রামটি রান হবে না। প্রোগ্রামিং এর শুরুর দিকে অনেকেই সেমিকোলন দিতে ভুলে যায়,তখন কম্পাইল এরর (compile error) দেখায়, পরে কোথায় ভুল হয়েছে খুজে বের করার চেষ্টা করে। একটু খেয়াল করে কোড লিখলে এসব ছোটখাটো ভুল গুলো সহজেই এড়ানো যায়।

এবার এ প্রোগ্রামটি নিজে নিজে লিখতে চেষ্টা করুন। Hello world! এর পরিবর্তে আপনার নাম বা ইচ্ছে মত কিছু দিয়ে রান করার চেষ্টা করুন।

সূত্রঃ  টিস প্রিয় ডট কম

favicon59

Sharing is caring!

Leave a Comment