খরচ কম পড়া বেশি

খরচ কম পড়া বেশি

  • ক্যারিয়ার ডেস্ক

অষ্টম শ্রেণির আইভি আক্তার গল্পের বইয়ের পোকা। কয়েক দিন পর পরই তার নতুন বই পড়া চাই। তবে এ ক্ষেত্রে খরচ তার জন্য একটি সমস্যা। ‘আমার অনেক বই পড়ার ইচ্ছা, কিন্তু সব সময় বই কিনে পড়ার জন্য টাকা থাকে না।’

এদিক থেকে কুমিল্লার অধ্যাপক আবদুল মজিদ কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী জাহিদ হাসান এগিয়ে। খরচ বাঁচাতে সে স্কুলের লাইব্রেরি থেকে বই নিয়ে পড়ত। তবে ঈদের পরেই সে চলে যাবে বাড়ি থেকে দূরে কলেজ হোস্টেলে। এখন সে চাচ্ছে নিজে কিছু বই কিনে সঙ্গে নিয়ে যেতে। বন্ধুদের কাছেও খোঁজ নিচ্ছে সে, যদি পাওয়া যায়, তাদের কাছ থেকেই ধার করে নিয়ে যাবে।

পঞ্চগড়ের বিপি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র সাদমান শাকিবের পছন্দ গোয়েন্দা গল্প। সে গোয়েন্দা গল্পের বই বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি থেকে ধার পায়।

আইভি, জাহিদ, সাদমানের মতো তোমাদেরও নিশ্চয়ই অনেক গল্পের বই পড়তে ইচ্ছা করে। তিন গোয়েন্দা, সায়েন্স ফিকশন, ভূতের গল্প তোমাদেরও নিশ্চয়ই প্রিয়। নতুন বই পড়ার ক্ষেত্রে বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিলেই তোমারও খুব কম খরচে অনেক বই পড়া হয়ে যাবে। চলো তাহলে দেখে নিই কিভাবে কম খরচে অনেক বই পড়ে ফেলা যায়।

আগে বাছাই

বাজারে বইয়ের অভাব নেই। ভালো বইও আছে অনেক। তবে ভালো হলেই যে তোমারও ভালো লাগবে এমন কথা নেই। আগে সিদ্ধান্ত নাও তুমি কোন কোন বই পড়তে চাও। একবারে অনেক বইয়ের চিন্তা না করাই ভালো। কারণ একবারে অনেক বই কিনতে পারবে না। আবার পড়তে পড়তেই দেখবে নতুন কেনা বইটা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন পত্রিকায় নজর রেখে বই রিভিউ পড়তে পারো। এতে তোমার বইটি সম্পর্কে একটি ধারণা হবে। এ ক্ষেত্রে তোমার পছন্দের গল্পের বইগুলো কোন কোন প্রকাশনী ছাপায় তাদের তালিকা করে নিতে পারো। এরপর তাদের কাছেই নতুন বইয়ের খবর রাখো।

 ফ্রি-তে পড়ো

বিদেশি ভালো ভালো অনেক লেখকের বই অনলাইনে ফ্রি পাওয়া যায়। গুগলকে একটু জিজ্ঞেস করলেই দিয়ে দেবে হদিস। আছে অনেক ফ্রি লাইব্রেরিও। পিডিএফ কপি নামিয়ে কম্পিউটারে পড়ে ফেলতে পারবে, আবার চাইলে বড় ডিসপ্লের মোবাইল বা ট্যাবেও পড়তে পারবে দিব্যি। শুধু বইয়ের নাম লেখকের নাম লিখে সঙ্গে জুড়ে দাও ‘পিডিএফ’।

লাইব্রেরিতে ঢুঁ

স্কুলের লাইব্রেরিতে খোঁজ নাও তোমার পছন্দের বইটি আছে কি না। এতে দুটি কাজ হবে। স্কুলের শিক্ষকরাও তোমাকে অন্য রকম চোখে দেখবে, আবার বই পড়াও হয়ে যাবে। একেবারেই নিখরচায়। তাই কোনো বই পড়তে ইচ্ছা করলে আগে স্কুলের লাইব্রেরিতে খোঁজ নাও। বই না থাকলে লাইব্রেরির দায়িত্বে থাকা শিক্ষকের কাছে ওটা সংগ্রহ করে আনার আবদার জানাও।

বন্ধু ও বড়দের দরবারে

কোনো বই ভালো লাগলে আগে বন্ধু ও সিনিয়রদের কাছে খোঁজ নাও। আবার এমনিতেই কোনো বন্ধুর কালেকশনে কী কী বই আছে তার একটা তালিকা করে ফেলো। সময়সুযোগ করে ধার নিয়ে বই পড়ে আবার চটজলদি সেটা ফেরত দিয়ো। তবে পরেরবার ধার পেতে সুবিধা হবে অনেক। আবার নিজেরা একজোট হয়েও একটা বড় তালিকা করে ফেলো। এরপর নিজেরা নিজেরা স্লোগান দাও—বই ধার দিন, ধার নিন।

সদস্য হতে বাধা নেই

খোঁজ নাও তোমার এলাকায় সপ্তাহের কোন দিন বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের বইভর্তি বাসটা আসে। যদি একবার কার্ড করে নাও, তাহলে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র থেকেই বই পাবে। সেই সঙ্গে খোঁজ নাও আশপাশে আর কোথায় লাইব্রেরি আছে। সবগুলোতে সদস্য হয়ে যাও। এসব ক্ষেত্রে সময়মতো বই ফেরত দেওয়া জরুরি। এতে নতুন বই এলে সবার আগে দেখবে তুমিই খবর পাবে।

অনলাইনে ছাড়

বই কেনার আরেকটা বড় খরচ হলো আসা-যাওয়ার খরচ। সেটা বাঁচাতে চাইলে যাও অনলাইনে। অনলাইনে প্রায়ই বই কেনার ওপর ছাড় থাকে। আবার বই বাসায় পৌঁছে দেয় বলে যাতায়াতের খরচ ও সময়—দুটিই বাঁচে।

প্রকাশনী থেকে

একসঙ্গে অনেকগুলো বই কিনলে সরাসরি প্রকাশনী সংস্থা থেকেই কিনতে পারো। এতে বলেকয়ে ভালো একটা ডিসকাউন্ট বাগাতে পারো। আবার অনেক ভালো বইয়ের নকল কপিও বের হয়। প্রকাশনী থেকে কিনলে তা নিয়ে আর ভয় নেই।

♦    অনলাইনে বিদেশি বইয়ের ফ্রি পিডিএফ পাওয়া যায়।

♦    লাইব্রেরির দায়িত্বে থাকা শিক্ষককে জানাও দরকারি বইয়ের কথা।

♦    বন্ধুদের বই ধার দাও, ধার নাও।

♦    সদস্য হও বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র ও আশপাশের পাঠাগারের।

সূত্র: কালের কণ্ঠfavicon59

Sharing is caring!

Leave a Comment