প্রিলি প্রস্তুতি : ভালো করার একটাই উপায়-চর্চা, চর্চা এবং চর্চা

প্রিলি প্রস্তুতি : ভালো করার একটাই উপায়-চর্চা, চর্চা এবং চর্চা

  • ক্যারিয়ার ডেস্ক

৩৭তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি প্রস্তুতির আজকের বিষয় গাণিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতা। পরামর্শ দিয়েছেন ২৯তম বিসিএসে ট্যাক্স ক্যাডারে তৃতীয় মহিদুল ইসলাম চৌধুরী।


গাণিতিক যুক্তি

গাণিতিক যুক্তি অংশটিতে সঠিক প্রস্তুতির অভাবে অনেকেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে ব্যর্থ হয়। এ বিষয়ে পূর্ণমান ১৫। বীজগণিত অংশ থেকে বীজগণিত সূত্রাবলি, সূচক ও লগারিদম, শ্রেণিবিন্যাস ও সমাবেশ সম্ভাব্যতা, গুণোত্তর অনুক্রম ও ধারা—এই বিষয়গুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অন্যদিকে পাটিগণিত অংশ থেকে লসাগু-গসাগু, শতকরা, সরল, লাভ-ক্ষতি—এই বিষয়গুলো থেকে সাধারণত বেশি প্রশ্ন হয়ে থাকে। জ্যামিতি অংশ থেকে এক-দুটি প্রশ্ন আসবেই। এ ক্ষেত্রে ত্রিভুজ, চতুর্ভুজ-সংক্রান্ত উপপাদ্য ও সরল ক্ষেত্রের বিষয়গুলো বেশি গুরুত্বপূর্ণ। গাণিতিক যুক্তির অংশে ভালো করার মূলমন্ত্র বারবার অনুশীলন। অন্তত বিগত ১২ বছরের বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্নের সমাধান করতে হবে। এতে প্রশ্ন সম্পর্কে একটি স্পষ্ট ধারণা হবে।

বিগত বছরগুলোর প্রশ্ন বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গণিতে সাধারণত প্রশ্ন কমন পড়ে না। একেকবার একেক রকম প্রশ্ন আসে। গণিতে খুব বেশি পটু না হলে নির্দিষ্ট সময়ে অন্য বিষয়গুলো কভার করে গণিতের সব প্রশ্নের উত্তর করা কঠিন। তাই আয়ত্ত করতে হবে কম সময়ে গণিতের সমাধান করার কৌশল। এ ক্ষেত্রে নিয়মিত অনুশীলনের অভ্যাস কাজে দেবে। প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় সাধারণত এমন সব অঙ্কই থাকে, যা শর্টকাটে সমাধান করা যায়।

220000kalerkantho-24-08-16-SF-03
২৯তম বিসিএসে ট্যাক্স ক্যাডারে তৃতীয় মহিদুল ইসলাম চৌধুরী

গণিতের জন্য অষ্টম, নবম-দশম শ্রেণির বোর্ড বই দেখতে হবে। গণিতের পুরনো সিলেবাসের বইয়ের অঙ্ক সমাধান করলেও কাজে দেবে। প্রফেসরস, ওরাকল, সেলফ কনফিডেন্স, সিলেক্ট, জেনুইন, এমপিথ্রি প্রভৃতি বিসিএস প্রিলিমিনারি গাইড বাজারে পাওয়া যায়। বিভিন্ন গাইড বইয়ের মডেল টেস্টগুলো দিতে হবে। এসব বইয়ে বিগত বছরের প্রশ্নও দেওয়া থাকে। জব সলিউশনের বইগুলোতে দেওয়া বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নগুলো সমাধান করলে কাজে দেবে।

মানসিক দক্ষতা

মানসিক দক্ষতা থেকে থাকবে ১৫ নম্বর। প্রশ্ন করা হবে ভাষাগত যৌক্তিক বিচার, সমস্যা সমাধান, বানান ও ভাষা, যান্ত্রিক দক্ষতা, স্থানাঙ্ক সম্পর্ক ও সংখ্যাগত ক্ষমতা থেকে। বিগত বছরের প্রশ্ন দেখলে প্রস্তুতি সম্পর্কে একটি ধারণা পাওয়া যাবে। এ অংশে বুদ্ধিবৃত্তিক প্রশ্ন করা হয়। মাথা ঠাণ্ডা রেখে, ভালোভাবে প্রশ্ন পড়ে, পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে উত্তর করতে হবে। কমনসেন্স, বিচার-বুদ্ধি কাজে লাগালেই এ অংশে ভালো করা যাবে।

প্রস্তুতির জন্য হাতের কাছে রাখতে হবে তিন-চার সেট গাইড বই। আইকিউ টেস্টের কিছু বইও প্রস্তুতিতে কাজে আসবে। অনেক ওয়েবসাইট আছে যাতে আইকিউ টেস্ট থাকে। সিলেবাসের বিভিন্ন টপিক গুগলে ইংরেজিতে লিখে সার্চ করে বিভিন্ন সাইটে ঢুকে নিয়মিত সলভ করুন। গাণিতিক যুক্তির মতো এ অংশেও সাধারণত প্রশ্ন কমন আসে না। তাই ভালো করতে হলে বেশি বেশি চর্চা করতে হবে।

আগের সব বিসিএস লিখিত পরীক্ষার প্রশ্ন আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইভিনিং এমবিএ ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নব্যাংক সলভ করে ফেলুন। এ অংশে ফুল মার্কস পাওয়া কঠিন—এটা মাথায় রেখে প্রস্তুতি নিন। দেখবেন পরীক্ষা ভালো হয়েছে।

সাধারণ কিছু বিষয়

সময় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই স্বল্প সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চসংখ্যক গণিতের প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে হলে ৩০-৪৫ সেকেন্ডের মধ্যে প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। প্রথম কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর জানা না থাকলে পরীক্ষার্থীরা হতাশ হয়ে পড়েন। হতাশ না হয়ে পরবর্তী প্রশ্নগুলোর সমাধান করতে হবে। গাণিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতার উত্তর পরীক্ষার প্রথমেই অথবা শেষে দেওয়া ঠিক হবে না। পরীক্ষার প্রথমেই অন্য একটি সহজ অংশের উত্তর দিয়ে মাঝামাঝি সময় গণিতের উত্তর দেওয়া উচিত। কারণ প্রথমেই একটি সহজ বিষয়ের উত্তর দিলে মানসিক দৃঢ়তা তৈরি হয় এবং এটি গণিতের প্রশ্নের উত্তরে কাজে লাগে। অন্যদিকে সব শেষে গণিত অংশের উত্তর দিতে গেলে পরীক্ষার সময় নিয়ে টেনশনের কারণে পরীক্ষা খারাপ হতে পারে।

বাংলা ও ইংরেজি দুটি ভাষা-মাধ্যমেই প্রশ্ন হতে পারে। তাই দুইভাবেই উত্তর করার প্রস্তুতি নিতে হবে। ইংরেজিতে প্রশ্ন এলে সহজ হলেও অনেকে প্রশ্ন বুঝে না ওঠার কারণে উত্তর করতে পারে না। ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন থাকে ইংরেজিতে। সেসব প্রশ্ন দেখে সমাধান করলেও উপকারে আসবে।

সূত্র: কালের কণ্ঠfavicon59

Sharing is caring!

Leave a Comment