কোথায় বিনিয়োগ করবেন

কোথায় বিনিয়োগ করবেন

  • আবু আলী

মানুষ যা আয় করে তার পুরোটা খরচ করে না। কিছুটা রেখে দেয় ভবিষ্যতের জন্য। এই টাকা সঞ্চয় বা বিনিয়োগ হিসেবে রাখে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে। দেশে ব্যাংক, বিমা, শেয়ারবাজার, সরকারি সঞ্চয়পত্র, বন্ড, ডাকঘর এগুলোয় বিনিয়োগের সুয়োগ রয়েছে। তবে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ ঝুঁকিপূর্ণ। এখানে যেমন বেশি মুনাফা পাওয়ার সম্ভাবনা আছে, তেমনি লোকসানের ঝুঁকিও আছে। অন্য খাতগুলোয় অনেকটা নিরাপদেই বিনিয়োগ করা যায়। এর বাইরেও

বিভিন্ন ধরনের সমবায় সমিতি ও এনজিওতেও সঞ্চয়ের সুযোগ রয়েছে। তবে এগুলোয় সঞ্চয় করা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।

প্রাইজবন্ড : আগের মতো এখনো সঞ্চয়ের একটি জনপ্রিয় উপকরণ হচ্ছে প্রাইজবন্ড। ১৯৭৪ সালে ১০ টাকা মূল্যমানের প্রাইজবন্ড বাজারে ছাড়া হয়। ১৯৮৫ সালে ৫০ টাকা মূল্যমানের প্রাইজবন্ড ছাড়া হয়। ১৯৯৫ সালে ১০ টাকার প্রাইজবন্ডের ড্র বন্ধ করা হয়। একই বছর থেকে চালু করা হয় ১০০ টাকার প্রাইজবন্ড। বর্তমানে কেবল ১০০ টাকার প্রাইজবন্ড চালু আছে। এর রয়েছে ৪৩টি সিরিজ। প্রাইজবন্ডের বিপরীতে কোনো মুনাফা দেওয়া হয় না। তবে প্রতি তিন মাস পর পর ড্র অনুষ্ঠিত হয়। এর বিপরীতে প্রতি সিরিজের জন্য ৪৬টি পুরস্কার রয়েছে, যার মূল্যমান ১৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা। প্রথম পুরস্কার একটি ৬ লাখ টাকা, দ্বিতীয় পুরস্কার একটি ৩ লাখ ২৫ হাজার টাকা, তৃতীয় পুরস্কার দুটি ১ লাখ টাকা করে, চতুর্থ পুরস্কার দুটি ৫০ হাজার টাকা করে এবং পঞ্চম পুরস্কার ৪০টি ১০ হাজার টাকা করে। মোট ১ হাজার ৯৭৮টি পুরস্কার।

পুরস্কার পেলে মূল বন্ডসহ নির্ধারিত ফরমে আবেদন করলে সর্বোচ্চ দুই মাসের মধ্যে বিজয়ীকে পে-অর্ডারের মাধ্যমে পুরস্কারের টাকা দেওয়া হয়। তবে পুরস্কারের টাকার ওপর কর দিতে হয় ২০ শতাংশ।

যে কোনো ব্যাংক, সঞ্চয় ব্যুরোর অফিস থেকে যে কোনো সময় প্রাইসবন্ড কেনা যায়।

সঞ্চয়পত্র : সরকারি খাতের সঞ্চয়পত্রগুলোয় বিনিয়োগ করেও মেয়াদ শেষে ভালো মুনাফা পাওয়া যায়। বর্তমানে চার ধরনের সঞ্চয়পত্র রয়েছে। এগুলো হচ্ছে: পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রে মুনাফার হার ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ, পাঁচ বছর মেয়াদি পরিবার সঞ্চয়পত্রে মুনাফার হার ১১ দশমিক ৫২, তিন বছর মেয়াদি তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার ১১ দশমিক শূন্য ৪ ও পাঁচ বছর মেয়াদি পেনশনার সঞ্চয়পত্রের মুনাফা ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ।

তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র, পেনশনার সঞ্চয়পত্র ও পরিবার সঞ্চয়পত্রের মুনাফা মাসিকভিত্তিতে তোলা যায়।

পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র একক নামে ৩০ লাখ টাকা ও যুগ্ম নামে ৬০ লাখ টাকা পর্যন্ত কেনা যায়। পরিবার সঞ্চয়পত্র একক নামে ৪৫ লাখ টাকা পর্যন্ত, তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র একক নামে ৩০ লাখ ও যুগ্ম নামে ৬০ লাখ টাকা পর্যন্ত কেনা যায়। পেনশনার সঞ্চয়পত্রের ক্রয়সীমা একক নামে ৫০ লাখ টাকা।

বন্ড : বর্তমানে বাজারে মোট চার মেয়াদের বন্ড রয়েছে। এগুলো হলো: ৫ বছর, ১০ বছর, ১৫ বছর ও ২০ বছর মেয়াদি বন্ড। ট্রেজারি বন্ডের প্রত্যেকটিরই অভিহিত মূল্য ১ লাখ টাকা। পুঁজিবাজার বা বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিলাম থেকে এসব বন্ড কেনা যায়। এসব বন্ডে বিনিয়োগ করে বছরে ৭ থেকে ১২ শতাংশ হারে মুনাফা পাওয়া যায়।

ব্যাংক : বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোয় আমানতকারীদের জন্য বিভিন্ন ধরনের মেয়াদি হিসাব রয়েছে। এগুলোয় বিনিয়োগ করে বছরে ৬ থেকে ৮ শতাংশ মুনাফা পাওয়া যায়।

শেয়ারবাজার : টাকা একটু বেশি হলে এবং তুলনামূলক ঝুঁকি নিতে চাইলে খোলা আছে শেয়ারবাজার। একটি বেনিফিশিয়ারি ওনার (বিও) হিসাব থাকলেই হলো। ভালো কোম্পানি দেখে শেয়ার কিনতে পারেন। এ ছাড়া প্রাইমারি শেয়ারেও বিনিয়োগ করতে পারেন।

সূত্র: আমাদের সময়

Sharing is caring!

Leave a Comment