তিন তরুণের বোকাবাক্স

তিন তরুণের বোকাবাক্স

  • উদ্যোক্তা ডেস্ক

কাঠের গয়নাসহ ভিন্নধাঁচের কিছু পণ্য তৈরি করে হালফ্যাশনে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে বোকাবাক্স। বোকাবাক্সের উদ্যোক্তা এবং যারা এটিতে কাজ করেন, তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপত্যপড়ুয়া তরুণ।

‘আমরা নিজেদেরকে বোকা মনে করি। মানুষসহ প্রাণিজগতের প্রতিটি প্রাণী নির্ভর করে ‘নেচার’ ও ‘আর্কিটেকচার’-এর উপর। চালাকরা ‘নেচারে’, আর বোকারা পড়ে থাকে ‘আর্কিটেকচার’ নিয়ে। সমাজের উপর থেকে নীচ পর্যন্ত প্রতিটি মানুষই দিনশেষে একটা ঘরের ভিতর ঘুমায়। তাই আমরা সবাই বাক্সবন্দী, এবং বোকা। তাই, বোকাবাক্স নামটাই মাথায় এলো।’ বলছিলেন বোকাবাক্সের অন্যতম কর্ণধার অর্ণব সাহা।

অনলাইনে ফেসবুকের মাধ্যমে নান্দনিক ডিজাইনের কাঠের গয়না, লাইট, স্কেচবুকসহ ভিন্নধাঁচের পণ্য বিক্রি করছে বোকাবাক্স। এরমধ্যে কাঠের অলঙ্কারের ভাবনাটা নতুনই বলা চলে।

উদ্যোক্তাদের মধ্যে অর্ণব সাহা স্থাপত্যে স্নাতক করেছেন। তিনি যখন প্রথম চাকরিতে ঢোকেন, তখন একদিন কাজ করতে করতে তার স্কেচবুক ফুরিয়ে যায়। এরপর তিনি নিজেই স্কেচবুক বানান। এমন করতে করতে ২০টি স্কেচবুক তৈরি করে ফেলেন। তখনই হাতে নানারকম পণ্য তৈরির ভাবনাটা তার মাথায় আসে। নিজের বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের স্থাপত্যের আরেক শিক্ষার্থী কাজী আতিককে সঙ্গে নিয়ে ২০১৬ সালের জুন মাসে খুলে বসেন বোকাবাক্স। এরপর থেকেই তারা ভিন্নধরনের উপকরণ, কাঠ, তামা, পিতল, সিলভার, এক্রিলিক ও সুতো দিয়ে গয়না তৈরি করতে শুরু করেন। পরে তাদের সঙ্গে যোগ দেন এশিয়া প্যাসিফিকের গোলাম তামজীদ ও সামিয়া মুনীর এবং ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্মি সাহা। তামজিদ ছবি ও নকশা আঁকেন, আর সামিয়া সুতো দিয়ে ড্রিম ক্যাচার তৈরি করেন। প্রত্যেকটি পণ্যই তারা নিজেদের হাতে তৈরি করছেন। এখন বিভিন্ন ফ্যাশন এক্সিবিশন, ইভেন্টে অংশ নিচ্ছে বোকাবাক্স। আর ফেসবুক ডটকম স্ল্যাশ bokabaksho777 পেজে দেওয়া হয় তাদের তৈরি সব গয়নার ছবি।

যাত্রা শুরুর প্রথমদিকে বোকাবাক্সের তৈরি গয়না কেবল উদ্যোক্তারা পরিচিতজনদের মাঝে বিক্রি করতেন। আস্তে আস্তে পরিচিতি ও বিক্রি বাড়তে শুরু করে। শুরুর দিকে অর্ডার এলে অর্ণবরা নিজেরা সাইকেলে করে গিয়ে গয়না লোকজনের বাসায় দিয়ে আসতেন। গেল বছরের সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে দিকে ফ্যাশন হাউস পটের বিবির ইভেন্ট বিবির পার্বণে অংশ নেয়ার সুযোগ পায় বোকাবাক্স, আর সেখান থেকেই আরও বাড়ে পরিচিতি। প্রথম প্রথম কেবল ঢাকার ভিতর থেকে সব অর্ডার পেলেও এখন চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, টাঙ্গাইল থেকেও অর্ডার আসে। এখন প্রতিটি ডিজাইন উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বিক্রি হয়। ঢাকার বাইরে থেকে অর্ডার এলে সেটি পাঠানো হয় কুরিয়ারে।

উদ্যোক্তারা বলেন, ভবিষ্যতে তাদের আউটলেট বসানোর পরিকল্পনা আছে। চলছে ওয়েবসাইট তৈরির কাজ। বোকাবাক্সকে নিয়ে তারা অনেকদূর এগিয়ে যেতে চান।

সূত্র: ইত্তেফাকfavicon59-4

Sharing is caring!

Leave a Comment