অনলাইন ঈদ বাজারে এগিয়ে নারী উদ্যোক্তারা

অনলাইন ঈদ বাজারে এগিয়ে নারী উদ্যোক্তারা

  • উদ্যোক্তা ডেস্ক

সময়, প্রয়োজন আর আধুনিকতার কারণেই জায়গা করে নিয়েছে অনলাইন বাজার। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কিংবা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ঘরে বসেই কেনাকাটা শুরু করেছেন আমাদের নারীরা। জনপ্রিয় হয়ে উঠতে শুরু করেছে অনলাইন কেনাবেচা। ঈদকে সামনে রেখে আরো জনপ্রিয় হচ্ছে এসব বাজার। অনলাইনে এসব কেনাবেচা জনপ্রিয় হয়েছে ২০১১ সালের পর থেকে। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানই ডাকযোগে পণ্য পাঠিয়ে দেয়। মূল্য পরিশোধের বিষয়ে বেছে নেয় বিকাশ কিংবা কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্টকে। সবচেয়ে লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে, অনলাইনের এসব বিক্রেতার অধিকাংশই নারী উদ্যোক্তা। পড়াশোনা শেষ করে ঘরে বসে আছেন অথবা নিজের কিছু একটা করা দরকার, এই তাগিদ থেকেই মাঠে নেমেছেন।


রীম ভূইয়া

ফ্যাশন সিটি বাই রীম

ছোট বেলা থেকে দেখে আসছি যে আমার মা ডিজাইন করে এবং শেলাই করতে খুব ভালোবাসতেন। আমাকে অনেক সুন্দর সুন্দর জামা বানিয়ে দিতেন, এমন কি বড় হবার পর অমি জামা ডিজাইন করতাম আর মা বানিয়ে দিতেন! কবে যে এই শখ আমার জীবনের লক্ষ্য হয়ে গেল বুঝলামই না! এর মধ্যে বিয়ে হয়ে গেলো। পরিবারের সমর্থনে শুরু করে, আজ আমার অনলাইন পেজের তিন বছর হয়ে গেছে! স্বপ্ন দেখি আরো বড় কিছু করার। আর আমি সবাইকে  বলতে চাই যে স্বপ্ন পূরণের সময় কখনো পেরিয়ে যায় না, শুধু আশা ছাড়তে হয় না!

লামইয়া হোসাইন

আফিয়া কালেকশন

1497188812শখ আর মেধার মিশ্রণেই ব্যবসায় আসা। ২০১৫ সালে ফ্যাশন ডিজাইনিংয়ে ডিপ্লোমা সম্পন্ন করার পর এমন চিন্তা মাথায় আসে। অনলাইনে কেনাকাটা করতাম, ফলে অভিজ্ঞতা ছিলো। ব্যাগ আমদানি করতে কিছু ডিলারের সাথে চুক্তিস্বাক্ষর করলাম। থাইল্যান্ড আর চায়না থেকে আনা ব্যাগগুলো সবার খুবই পছন্দ হয়, সেই শুরু। পাশাপাশি পোশাকও ডিজাইন করছি, আমার বানানো জামা কারো গায়ে পড়তে দেখলে আনন্দ হয়। নিজে স্বাবলম্বী হতে পেরে খুব ভালো লাগে। ইচ্ছা আছে একটা শোরুম দেয়ার।

নাজিয়া খন্দকার

সুএনস

শব্দটির অর্থ স্বপ্ন, আর এই স্বপ্নটি আমি দেখেছিলাম ২০১২ সালে। শখের বসে লেখাপড়ার মাঝেই ফেসবুকে হুট করে খুলে ফেলি একটি পেজ। তখন ছিল হাতে গোনা কয়েকটা অনলাইন পেজ। বিকাশে দেওয়া অগ্রিম টাকা দিয়ে শুরু হয় আমার প্রথম কাজ। এবং তার রিভিউ দেখে আসতে থাকে আরো অর্ডার। সকলের কাছে ভালো সাড়া পাই, তখনই স্থির করে নেই এটাকেই পেশা হিসেবে গ্রহণ করবো। পারিবারিকভাবেও সবাই উৎসাহ দিতে থাকে বিশেষভাবে আমার মা। বর্তমানে আমার কালেকশনে আছে প্রসাধনী, নেকলেস আর ইন্ডিয়ান ড্রেস যেগুলো আমি বাইরে থেকে এনে আমার গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছি। ব্যবসা শুরু করা যতটা সহজ, ব্যবসাক্ষেত্রে টিকে থাকা ততটা কঠিন। এখন আমি স্বপ্ন দেখি ঢাকার ভিতর খুব শীঘ্রই একটি আউটলেট হবে যেখানে পাওয়া যাবে হরেক রকমের জিনিস।

এমেলী আফরিন নিসা

নাহার অনলাইন শপ

সব সময়ই আমার নিজের কিছু করতে ইচ্ছে করত। ইউনিভার্সিটি থেকেই শুরু হয় আমার অনলাইনে ব্যবসা। প্রথমে শুরু করেছিলাম ড্রেস দিয়ে। নাহার আমার আম্মুর নাম। তার উৎসাহে এত দূর আসতে পেরেছি। কাপড়ের ব্যবসায় আমি আমার অনলাইন কাস্টমারদের অনেক সাপোর্ট পেয়েছি খুব কম সময়েই। এই পেইজ এর পাশাপাশি চায়না থেকে ব্যাগ ইম্পর্ট করি। আর কিছু আমাদের দেশের ডিলারদের কাছ থেকে সংগ্রহ করি। যারা থাইল্যান্ডের ব্যাগ  আনিয়ে থাকে। ব্যাগের পেইজেই এখন বেশি সময় দিতে হয়। কাস্টমার রেস্পন্স অনেক বেশি। ঘরে বসেই  কাস্টমার পেয়ে যায় তার পছন্দের ব্যাগ। সর্বনিম্ন মূল্যে মানসম্মত প্রোডাক্ট কাস্টমারদের হাতে পৌঁছে দিতে চাই। অনলাইনে ব্যবসা করে আমি নিজে আত্মনির্ভরশীল হতে পেরেছি। নিজের কিছু করার স্বপ্ন আমার সত্যি হয়েছে।

নুসরাত জাহান নিশি

ব্লসম বাই নুসরাত

বিয়ের পর ফ্যাশন ডিজাইনিংয়ে ভর্তি হয়েও শেষ করতে পারিনি ছোট সন্তানের জন্য। অনেকটা হতাশ ছিলাম। সমবয়সী বন্ধুরা এগিয়ে যাচ্ছিল, একদিন জেদ চাপল কিছু একটা করব—নিজের অস্তিত্বটাকে প্রমাণ করব। নিয়তির কাছে হেরে গেলে চলবে না। আমার প্রধান সাপোর্ট হয়ে আশীর্বাদের মতো পাশে দাঁড়াল আমার মা। আমার স্বামী ও শ্বাশুড়ির উৎসাহে বাঁধা এসেছে কষ্ট হয়েছে কিন্তু থেমে যাইনি। সফলতার পথ সহজ নয় এই কথাটা মাথায় রেখে এগিয়ে যাচ্ছি।

সূত্র: ইত্তেফাকfavicon59-4

Sharing is caring!

Leave a Comment