ব্যবসায় উন্নতি: পাঁচ কৌশলে বাজিমাত

ব্যবসায় উন্নতি: পাঁচ কৌশলে বাজিমাত

জ্যাস কাটলার:
প্রতিষ্ঠাতা, কাটলার পি আর

আমি যখন কাটলার পি আর শুরু করি তখন আমার সাকূল্যে সম্বল ছিল দুই শ ডলার আর তিন জন মাত্র গ্রাহক। সময়টা ২০০৯। কিন্তু তার মাত্র দুই বছর পরই আমি আমার প্রতিষ্ঠানে কর্মী নিয়োগ করতে শুরু করি। এর চার বছর পর আমরা দেখতে পাই, একটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান হিসেবে আমাদের বেশ সুনাম হয়েছে। এমনকি আমাদের খ্যাতি মানুষের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়েছে। আমাদের বিপণন কার্যিক্রম সম্পর্কে মানুষের আগ্রহ বেড়েছে। আজ ছয় বছর পর আমরা দেখছি, শুরুর মাসগুলোতে আমাদের যে আয় ছিল এখন তা একশ গুন বেড়ে গেছে।

তবে ভাবার কারণ নেই খুব সহজেই আমরা এটা অর্জন করতে পেরেছি। আমরা আসলে কয়েকটি কৌশল অবলম্বন করেছিলাম। যেমন, আমরা মানুষের কাছে নিজেদের প্রয়োজনীয় করে তুলেছিলাম। মানুষের কাছে আমাদের গুরুত্ব দিনকে দিন বাড়িয়ে তুলেছিলাম এবং আমাদের গ্রাহক সংখ্যা বাড়িয়েছিলাম। এছাড়াও আমাদের আরও কিছু কৌশল ছিল।

সেগুলো নিচে তুলে ধরছি:

১. দৌড়…দৌড়…দৌড়: এখন ব্যাবাসাটা শুধু মাত্র প্রদর্শনের কোনো বিষয় নয়। এটা কঠোর পরিশ্রমের আর যোগাযোগ নির্ভর একটি বিষয়। আপনাকে সৃজনশীল হতে হবে। আর আপনাকে হতে হবে একজন দক্ষ চালক, যাতে আপনি ভিন্ন উপায়ে ব্যবসাটাকে পরিচালিত করতে পারেন। এরপর আপনাকে নজর রাখতে হবে ব্যবসার লাভের ওপর এবং একই সাথে গ্রাহকেও খুশি রাখতে হবে। নির্দিষ্ট সংখ্যক গ্রাহকের কাছে পৌছার পর আপনাকে খুঁজে বের করতে হবে আরও নতুন গ্রাহক। ঘুরতে হবে শিল্প প্রতিষ্ঠানের দুয়ারে দুয়ারে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গড়ে তুলতে হবে বিভিন্ন মানুষের সাথে সম্পর্ক। আলোচনায় বসতে হবে শিল্প-মালিকদের সাথে। ফোন আর ইমেইলে যোগাযোগ রাখতে হবে সবসময়।

২. খুঁজে নিন উপযুক্ত ক্ষেত্র: কাঁধে প্রচণ্ড ব্যাথা আছে এরকম একজন রোগীর কথা ভাবুন। তার উচিত একজন বিশেষজ্ঞের কাছে যাওয়া যিনি জানেন এ রকম পরিস্থিতিতে কী ওষুধ দিতে হয়। সাধারণত এমনটাই ঘটে। এটা জটিল কোনো প্রশ্ন নয়। ব্যবসার ক্ষেত্রে যেটা হয় সেটা হচ্ছে, গ্রাহকরা সেসব বিষয়ের প্রতিই আকৃষ্ট হয় যেসব বিষয়ে কোম্পানি গ্রাহকদের মনের ভেতর প্রয়োজনবোধ তৈরি করতে পারে।

অতএব কাজের সুনির্দিষ্ট ক্ষেত্র নির্বাচন করুন। প্রতিষ্ঠার এক বছর পর আমি সিদ্ধান্ত নিই, আমার প্রতিষ্ঠান শুধুমাত্র ‘পাবলিক রিলেশন’ সংক্রান্ত সেবা দেবে। এর এক বছর পর আমি সিদ্ধান্ত নিই, এবার শুধু প্রযুক্তি ক্ষেত্রে নজর দেব। এখন আমরা বুটিক প্রযুক্তিতে নেতৃত্বদানকারী এজন্সি।

৩. ব্যবসায় ভিন্নতা আনুন: ব্যবসার প্রসার বাড়াতে চাইলে আপনার ব্যবসাকে প্রতিযোগিতা থেকে দূরে রাখুন। কেন না যেসব ব্যবসা ইতিমধ্যে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে তাদের রয়েছে সুনাম, সুপারিশ আর ব্র্যান্ডমূল্য। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে গ্রাহকের নজর সরিয়ে আনার জন্য আপনার ব্যবসায় অবশ্যই ভিন্নতা আনতে হবে।

৪. প্রতিষ্ঠানের আবেদনময়তা তৈরি করুন: ব্যবসায় প্রসার চাইলে আপনার প্রতিষ্ঠানের নাম মানুষের মুখে মুখে ছড়িয়ে দিন। যখনই গ্রাহকরা আপনার প্রতিষ্ঠানের সেবায় খুশি থাকবে তখনই তারা অন্যের কাছে আপনার প্রতিষ্ঠানের কথা বলবে। অতএব গ্রাহক সেবার দিকে নজর রাখুন। একটি ভালো পণ্য এবং সেই সাথে গ্রাহক সেবাই পারে গ্রাহকদের খুশি রাখতে। আর গ্রাহকরা তখন বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেয় সেই প্রতিষ্ঠানের নাম। অতএব গ্রাহকের কাছে আপনার প্রতিষ্ঠানের আবেদনময়তা তথা গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করুন। দেখবেন আপনার বর্তমান গ্রাহকরাই নতুন নতুন গ্রাহক নিয়ে আসবে। এজন্য বাঁধা গ্রাহক তৈরি করুন এবং তাদেরকে খুশি রাখুন।

৫. গুণী ব্যাক্তিদের নিজের প্রতিষ্ঠানে ডাকুন: একজন ব্যাক্তিই পারে একটি প্রতিষ্ঠানকে দীর্ঘ পথে পরিচালিত করতে। অতএব খুঁজে খুঁজে একজন গুণী ও দক্ষ ব্যাক্তিকে আপনার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত করুন। সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে দক্ষতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়।

Entrepreneur থেকে ভাষান্তর: মারুফ ইসলাম

Sharing is caring!

Leave a Comment