তাঁরা ‘অভিযাত্রিক’

তাঁরা ‘অভিযাত্রিক’

  • লিডারশিপ ডেস্ক

তাঁদের শুরু হয়েছিল ২০১০ সালের ২১ সেপ্টেম্বর। শুরুতে ছিলেন মাত্র চারজন। এখন ‘অভিযাত্রিক’ ছড়িয়ে আছে ৩২টি জেলায়। আড়াই হাজারের ওপর স্বেচ্ছাসেবক আছেন। বেশির ভাগই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন। প্রধান কার্যালয় ঢাকার মিরপুরের পল্লবীতে। পথশিশুদের লেখাপড়া শেখানোই তাঁদের কাজ। তবে গেল বছর থেকে ‘জয় অব গিভিং’ নামের একটি ইভেন্ট শুরু করেছেন তাঁরা। এবার তাতে হাজার দুয়েক পরিবারকে চাল, ডাল, ছোলা, মুড়ি, চিঁড়া, সেমাই, খেজুর, নুডলস, নিমকিসহ ইফতারির ব্যাগ দিয়েছেন। তিন কেজি ওজনের এই ব্যাগে ১৫ দিন ইফতার করা যাবে।

এবারের ইভেন্ট নিয়ে বলতে গিয়ে ইউল্যাবের (ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ) ছাত্র ও অন্যতম মডারেটর নাভিদ আনজুম বললেন, ‘এবারের ইভেন্টে মোট এক হাজার স্বেচ্ছাসেবক ছিলেন। ১৯ মে তাঁদের শিশু একাডেমিতে কর্মশালা করা হয়েছে। সেখানে তাঁরা কিভাবে মানুষের কাছে সাহায্য চাইবেন, কেউ সাহায্য করতে রাজি না হলেও তাঁকে ধন্যবাদ দিতে হবে—এসব শিখেছেন। এরপর ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অনুমতি নিয়ে মূল ইভেন্টটি হয়েছে ২১ মে। সেদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত মিরপুর, বনানী, বারিধারা, নীলক্ষেত, বিজয় সরণি, উত্তরার ট্রাফিক সিগন্যালসহ ২১টি পয়েন্টে ৫০ জন করে স্বেচ্ছাসেবক, একজন ক্যামেরাম্যান ছিলেন। তাঁদের সবার হাতে ইফতার ও সাহরির ক্যালেন্ডার, গায়ে কমলা রঙের টি-শার্ট। একজন করে মডারেটর তাঁদের কো-অর্ডিনেট করেছেন।’

কাকলী পয়েন্টের মডারেটর খাদিজা-তুল-কুবরা বললেন, ‘বেশির ভাগ সময় মধ্যবিত্তরাই সাহায্য করেছেন। কেউ নিজে এগিয়ে এসে টাকা দিয়েছেন। প্রতিবন্ধী, ভিক্ষুকরাও টাকা দিয়েছেন।’ অফিসে ফিরে আসার পর তাঁরা গুনে দেখলেন সাড়ে সাত লাখ টাকার বেশি সাহায্য পাওয়া গেছে। সেই টাকায় স্বেচ্ছাসেবকরা ইফতার ও নানা সামগ্রী কিনে প্যাকেটবন্দি করলেন। ঢাকায় ৮০০, গাজীপুরে ২০০, রংপুরে ৩০০, খাগড়াছড়িতে ৩০০, কক্সবাজারে ২০০ প্যাকেট পৌঁছানো ও বিলি করা হয়েছে। আরো ১০০ ব্যাগ কুষ্টিয়ায় পাঠানো হবে। অভিযাত্রিকের সভাপতি ইমতিয়াজ আহমেদ মিরপুর, ধানমণ্ডি, বনানী, গুলশানে ইফতারের ব্যাগ পৌঁছে দিয়েছেন। এক রিকশাচালক তাঁকে বলেছেন, ‘রাস্তায়ই তো বেশির ভাগ সময় ইফতার করি। বাড়িতে ভাত, পানি খেতে হয়। এবার ভালোমন্দ খাব।’ খাগড়াছড়ির কো-অর্ডিনেটর আসাদুজ্জামান বললেন, ‘১৩ জুন খাগড়াছড়িতে টোকেনের মাধ্যমে ইফতারি বিতরণ করেছি। তখন অনেকেই দোয়া করেছেন।’

অন্ধ, শারীরিকভাবে অক্ষম ব্যক্তিদের মধ্যে ইফতারের ব্যাগ বিলি করেছেন রংপুরের কো-অর্ডিনেটর জাবের বিন রেজাসহ ২৫ জন। ঢাকা ও বরিশালের ‘অভিযাত্রিক ফ্রি স্কুল’-এর ২৫০টি শিশুর মধ্যে পাঞ্জাবি ও ফ্রক বিতরণ করা হয়েছে, প্রতিটি পরিবারকে এক কেজি দুধ ও সেমাই দেওয়া হয়েছে। এই স্কুলে লেখাপড়ার কোনো খরচ নেই। তাদের অনেককেই ‘অভিযাত্রিক হেলথ কেয়ার’ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ফ্রি চিকিৎসা ও অর্ধেক দামে ওষুধ দেওয়া হয় বলে জানালেন অন্যতম পরিচালক মিনহাজ আহমেদ।

সূত্র: কালের কণ্ঠfavicon59-4

Sharing is caring!

Leave a Comment