ক্রেতা-দর্শনার্থীর চোখে বাণিজ্য মেলা

ক্রেতা-দর্শনার্থীর চোখে বাণিজ্য মেলা

প্রতি বছরের মতো এবারও অনুষ্ঠিত হয়ে গেল  ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। পুরো জানুয়ারি মাসজুড়ে মেলা ছিল সরগরম। তবে মেলার ব্যাপ্তি এক মাস হলেও শেষ দিকে ক্রেতা দর্শনার্থীর আগ্রহ ও চাহিদা বিবেচনায় নিয়ে ফেব্রুয়ারির ৪ তারিখ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছিল মেলার সময়। সদ্য সমাপ্ত বাণিজ্য মেলায় কেমন ছিল ক্রেতা দর্শনার্থীর অভিজ্ঞতা ? মেলা ঘুরে সেসব অভিজ্ঞতাই তুলে এনেছেন  রাফা তাসফিয়া কবির


তখন বিকেল। মাঘের শীতের তীব্রতা নেই। বাণিজ্য মেলায় উপচে পড়া মানুষের ভীড়ে হারিয়ে গেছে শীতের হাওয়া। এমনই হয়। শেষ পর্যায়ে এসে মেলায় ক্রেতা ও দর্শনার্থীর ভীড় বাড়ে। ছুটির দিনগুলোতে ভীড় বাড়ে আরও বেশি। কিন্তু যে ক্রেতাদের ঘিরে মেলার আয়োজন; সেই ক্রেতাদেরই মেলা নিয়ে ছিল বিস্তর অভিযোগ-অনুযোগ। তাদের সবচেয়ে বড় অভিযোগ, এলোমেলো স্টল বিন্যাসের কারণে পছন্দের পণ্য কিনতে গিয়ে ঘুরে ঘুরে হয়রান হতে হয়েছে তাদের।

এমনই এক ক্রেতার নাম রঞ্জিতা জামান। তিনি এসেছিলেন পরিবারের সঙ্গে। ‘এক্সকিউজ মি, থাইল্যান্ড প্যাভিলিয়নটা কোন দিকে বলতে পারেন? অনেক খুঁজেছি’—এভাবেই বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞেস করার পরও হদিস পাননি কাঙ্ক্ষিত স্টলের।

কাঙ্ক্ষিত স্টল খুঁজে না পেয়ে ক্লান্ত হয়ে বসে পড়েছেন ক্রেতারা। ছবি: রাফা তাসফিয়া কবির

মোহাম্মদপুর থেকে দুই সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে মেলায় এসেছিলেন রেজওয়ানা রাহী। শিশুদের খেলনা ও পোষাকের স্টলগুলো খুঁজতে গিয়ে প্রায় বিরক্ত হয়ে তিনি বলেন, ‘বাচ্চাদের নিয়ে এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে ঘুরে ঘুরে স্টলগুলো খুঁজে পাইনি। স্বেচ্ছাসেবীও ছিল না যাদের কাছে সাহায্য পাওয়া যাবে। এত ভোগান্তি হবে, বুঝতে পারিনি।’

ধানমন্ডির দর্শনার্থী মনিরুল ইসলামের অভিযোগ, মেলায় একই ধরনের পণ্য প্রদর্শনীর জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো স্থান রাখা ছিল না। দেশে উৎপাদিত প্লাস্টিকপণ্য, আসবাব, আ্যলুমিনিয়াম ও ইস্পাতের বিভিন্ন ধরনের রান্না-সামগ্রি, খাদ্যপণ্য ও কনফেকশনারি, মনিহারিপণ্য, গয়না, আমদানিকৃত এয়ারকন্ডিশন, রেফ্রিজারেটর, মোবাইল ফোনসেটসহ সব ধরনের পণ্যের স্টলই ছিল ছড়িয়ে ছিটেয়ে। বিদেশি প্যাভিলিয়নগুলোও ছিল বিক্ষিপ্ত। সঙ্গত কারণে প্রতিষ্ঠানভেদে পণ্যের মান ও দাম যাচাই-বাছাই করে কিনতে বেগ পেতে হয়েছে ক্রেতাদের।

এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে বক্তব্য জানার জন্য মেলা ব্যবস্থাপক বা তাদের কোনো প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে মেলার প্রবেশদ্বারে একটি লে-আউট দেয়া ছিল; তাতে ছিল কেবল স্টল নম্বর, এর বাইরে কিছু ছিল না। ইপিবি সেন্টারে গিয়ে ডিজিটাল ম্যাপের সাহায্যে কেউ কেউ দিক নির্দেশনা পেয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন।

Sharing is caring!

Leave a Comment