সময়ের সাথে বদলে যায় হাতিরঝিলের দর্শণার্থী

সময়ের সাথে বদলে যায় হাতিরঝিলের দর্শণার্থী

  • আব্দুল্লাহ আসিফ

এফডিসি থেকে রামপুরা পর্যন্ত বিস্তৃত ঝিলের দুই পাশ দিয়ে বিশাল রাস্তা। কি নেই সেই রাস্তায়? বিশাল ফুটপাত, ফুলের বাগান, রেস্তোরা, বসার বেঞ্চ, টেবিল, টেবিলে দাবার কোট ইত্যাদি। দুপুর থেকে শুরু হয় দর্শণার্থীদের আগমন, সন্ধ্যার পর বেশীর ভাগ মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের বিচরণ লক্ষ করা যায়। কেউ আসে তাদের পরিবার নিয়ে, কেউ আসে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে, কেউ আসে একাকী সময় কাটাতে আবার কেউবা ভালোবাসার মানুষের সাথে হাত ধরে হাটতে। পুরোটা বিকেলজুড়ে থাকে দর্শণার্থীদের আনাগোনা। সন্ধ্যা হতে না হতেই বেড়ে যায় প্রেমিক যুগলদের আনাগোনা। অন্ধকার নামতে হাতিরঝিল এক ভিন্ন রূপ ধারণ করে। হাতির ঝিলের সন্ধ্যাকালীন দৃশ্য মুগ্ধ করবে যে কাউকে, ব্রিজগুলোর লাইট এবং প্রাকৃতিক পরিবেশ এক সাথে মিশে এক অপরূপ সৌন্দর্য সৃষ্টি করে, যা দেখতে ভিড় জমায় অগণিত মানুষ। এই সৌন্দর্যের উপভোগের পাশাপাশি যদি ওয়াটার শো শুরু হয়ে যায়, তাহলে তো আর কথাই নেই। গানের তালে তালে জল তরঙ্গের খেলা ও কালার ফুল লাইটিং যে কাউকে মনে করিয়ে দিবে সিঙ্গাপুর, লন্ডন বা প্যারিসের কথা।

পূর্বে হাতির ঝিলে বাজতে থাকত অসাধারণ গান, আর গানের সাথে সাথে নাচতে থাকে পানির ফোয়ারা। শুরুতে প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭.০০টা থেকে ৮.০০টা পর্যন্ত ১৫ মিনিট অন্তর অন্তর এই ওয়াটার আর জলতরঙ্গের খেলা হলেও এখন আর প্রতিদিন সেটির দেখা মিলে না।

একজন নিরাপত্তাকর্মী জানান, এই ওয়াটার শো চালু হলে দর্শনার্থীদের ভিড়ে হাতির ঝিলে জ্যাম লেগে যেত তাই এখন আর এটি চালু করা হয় না।

একজন দর্শনার্থী মিলন (২৪) বলেন, “এই ওয়াটার শো তার খুবই পছন্দের, তিনি চান খুব তাড়াতাড়ি যেন আবার এই ওয়াটার শো চালু করা হয়”। ওয়াটার শো চলাকালীন সময় যদি আপনি ওয়াটার ট্র্যাক্সিতে থাকেন তাহলে নিঃসন্দেহে এই অনুভূতি আপনার কাছে চিরস্বরণীয় হয়ে থাকবে।

রাত যত গভীর হয় এই হাতির ঝিলের রূপ তত পরিবর্তন হয়। রাত ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত ছিনতাইকারী ও বিভিন্ন চোর-ছ্যাচড়াদের দখলে। যেসব স্থানে আলো কম সেসব স্থানে তাদের আখড়া। বর্তমানে প্রশাসনের তৎপরতায় এদের সংখ্যা অনেকাংশ কমে এসেছে। মধ্যরাতে হাতির ঝিল থাকে ধনীদের দামি দামি কারের দখলে। অনেকে আবার ভুলে যান যে, তার গাড়ীতে ব্রেক আছে। যার ফলে মাঝে মধ্যেই ভয়াবহ দূর্ঘটনা ঘটে থাকে, এতে প্রাণ হারিয়েছে বেশ কয়েকজন। এই বিষয়ে স্থানীয় একজন বাসিন্দা সজিব (২৪) জানান, “রাতের বেলায় এই রাস্তায় দামী গাড়িগুলো তাদের শক্তি দেখানোর জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে”। তিনি এই ব্যাপারে প্রশাসনের সহযোগিতা চান।

Sharing is caring!

Leave a Comment