ফ্রিল্যান্সিং : কী, কেন, কীভাবে

ফ্রিল্যান্সিং : কী, কেন, কীভাবে

  • ক্যারিয়ার ডেস্ক

ফ্রিল্যান্সিং বলতে বুঝায়

– মুক্তপেশা এবং আপনি যে বিষয়ে স্কিলড সে বিষয় নিয়ে কাজ করতে পারবেন।

– অফিস মেইনটেইন করতে হয় না কিন্তু ঘরে বসে কাজ করতে হয়।

– পরিপূর্ণ স্বাধীনতা কিন্তু বায়ারকে ডেটলাইন অনুসারে কাজ জমা দিতে হবে।

– যতখানি কাজ করবেন ঠিক ততখানি পারিশ্রমিক পাবেন কিন্তু কাজের মান হতে হবে আন্তর্জাতিকমানের।

ফ্রিল্যান্সিংয়ে যে ধরনের কাজের বেশি চাহিদা

১) সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (এসইও)

২) ওয়েব ডিজাইন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট

৩) মোবাইল অ্যাপস ডেভেলপমেন্ট

৪) গ্রাফিক্স ডিজাইন

৫) ভিডিও এডিটিং

৬) কন্টেন্ট রাইটিং

৭) ব্লগিং

৮) অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ইত্যাদি।

১) সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (এসইও): এসইও হলো একটা পদ্ধতি। যেই পদ্ধতিতে ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিনে র‌্যাক করানো হয়। অর্থাৎ সার্চ ইঞ্জিনে নির্দিষ্ট এক বা একাধিক কীওয়ার্ড দ্বারা সার্চ রেজাল্টে ওয়েবসাইটটিকে প্রথমে প্রদর্শন করার প্রক্রিয়াটা হচ্ছে এসইও।

কী-পয়েন্ট

সার্চ ইঞ্জিন : সার্চ ইঞ্জিন হলো ওয়েব দুনিয়াতে যে কোনো তথ্য বা ছবি খুঁজে বের করার প্রযুক্তিমাধ্যম। সার্চ ইঞ্জিনগুলো ওয়েবের প্রায় সব ওয়েবসাইটের ইনডেক্সগুলোর তথ্য সংগ্রহ করে এবং ইউজারের সামনে তা প্রদর্শন করা। সেরা ৫টি সার্চ ইঞ্জিন হলো: গুগল, ইয়াহু, বিং, আস্ক, বাইডু।

কীওয়ার্ড: কীওয়ার্ড হচ্ছে সার্চিং ওয়ার্ড। আপনি যদি কোন বিষয়ে জানতে চান, জানার জন্য অর্থবোধক যা লিখে গুগলে সার্চ করবেন সেটি হচ্ছে কীওয়ার্ড।

সার্চ রেজাল্ট: ধরুন আপনি গুগলে সার্চ করলেন- “Best perfume for men” এই কীওয়ার্ড লিখে সার্চ দেয়ার পর অনেক ওয়েবসাইট চলে আসল। এটাই হলো সার্চ রেজাল্ট।

২) ওয়েব ডিজাইন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট: ওয়েব ডিজাইন হলো একটি ওয়েবসাইটের ফ্রন্ট ইন্ড বা বাইরের রূপ, যা আপনি দেখতে চাইছেন তা কীভাবে দেখাচ্ছে সেটি হচ্ছে ব্যাক ইন্ড। একটি ওয়েবসাইটের ফ্রন্ট ইন্ড তৈরি করে ওয়েব ডিজাইনার এবং ওয়েব ডেভেলপমেন্ট হলো ব্যাক ইন্ডে কাজ করে ফ্রন্ট ইন্ডকে জীবন্ত রূপ দেয়া। একটি ওয়েবসাইট ডিজাইন করার আগে টার্গেটেড ভিজিটর নিয়ে চিন্তা করতে হয়। টার্গেটকৃত ভিজিটরের চাহিদা, রুচি ও অভ্যাস মাথায় রেখে ওয়েবসাইট ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট করতে হয়।

৩) মোবাইলে আপস ডেভেলপমেন্ট : আগামী কয়েক বছরের মধ্যে অ্যান্ড্রয়েড ফোনই হবে সর্বাধিক ব্যবহৃত মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলছে বিভিন্ন অ্যাপসের চাহিদাও। অ্যানড্রয়েড ফোনের জনপ্রিয়তাকে পুঁজি করে পৃথিবীর অনেক কোম্পানি তাদের নিজস্ব অ্যানড্রয়েড অ্যাপ তৈরি করাচ্ছে যাতে ব্যবহারকারীরা সহজেই তাদের সার্ভিস ব্যবহার করতে পারে। এজন্য ব্যবহারকারীদের গুগলে সার্চ করতে হয় না। শুধুমাত্র গুগল প্লে স্টোর থেকে অ্যাপস ইনস্টল করেই ইন্টারনেটের সাহায্যে কাঙ্ক্ষিত সেবা নেয়া যায়। বাংলাদেশে তুলনামূলক অ্যাপস ডেভেলপারের সংখ্যা খুব কম যদিও অ্যাপস ডেভেলপমেন্টের বিশাল চাহিদা রয়েছে।

৪) গ্রাফিক্স ডিজাইন: কোনো একটি বিষয়কে ছবি, লেখা কিংবা শেপ দিয়ে ভিজ্যুয়ালি উপস্থাপন করাটা হচ্ছে গ্রাফিক্স ডিজাইন। গ্রাফিক্স ডিজাইন হচ্ছে সৃষ্টিশীল কাজ। যে যত বেশি সৃষ্টিশীল, সে তত বেশি সফল। মার্কেট প্লেসে কিংবা লোকাল মার্কেটে প্রচুর পরিমাণে লোগো ডিজাইন, ব্যানার ডিজাইন, বিজনেস কার্ড ডিজাইনের কাজ রয়েছে। বায়ার সব সময় ইউনিক ডিজাইন পছন্দ করে। গতানুগতিক ধারার কিছুটা বাইরে গিয়ে আপনাকে ডিজাইন করতে হবে এবং নিজের সৃষ্টিশীলতা প্রকাশ করতে হবে।

৫) ভিডিও এডিটিং: ভিডিও এডিটিং করা হয় মূলত ভিডিওকে কাটা, নয়েজ রিমুভ, কালার কারেকশন, সাউন্ড মিক্সিং, ইফেক্ট ও এনিমেশন দ্বারা পরিপূর্ণভাবে সাজিয়ে একটা বার্তা কিংবা গল্প তৈরি করতে। ভিডিও এডিটিং করার জন্য অনেক সফটওয়্যারের ব্যবহার জানতে হয়। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু সফটওয়্যার হলো- অ্যাডোব প্রিমিয়ার প্রু, কেমটেসিয়া স্টুডিও, সনি ভেগাস, ফিলমুরা ইত্যাদি।

৬) কন্টেন্ট রাইটিং: কোয়ালিটি কন্টেন্ট ইজ কিং। মার্কেটে কন্টেন্ট রাইটিংয়ের চাহিদা ব্যাপক। বিশেষ করে যারা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং নিয়ে কাজ করে তাদের কন্টেন্ট প্রয়োজন হয়। কন্টেন্ট রাইটিং করতে হলে ভালো ইংরেজি জানতে হবে এবং ভালো কোন রাইটারের তত্ত্বাবধানে থেকে কিছুদিন প্র্যাকটিস করতে হবে এবং তার পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।

৭) ব্লগিং: ব্লগে এক বা একাধিক বিষয়ে লেখালেখি করাটাই হচ্ছে ব্লগিং। ব্লগিং করতে হলে একটি ব্লগ লাগবে। সেটি হতে পারে ফ্রি কিংবা পেইড ব্লগ। ব্লগিং বিভিন্ন বিষয় নিয়ে হতে পারে। যেমন: টেকনোলজি, রাজনীতি, ভ্রমণকাহিনী, জীবনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লেখা ইত্যাদি। ব্লগিং করতে হলে আপনাকে অনেক বেশি ধৈর্য ধারণ করতে হবে।

৮) অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং: অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে একটি প্রতিষ্ঠানের পণ্যের মার্কেটিং করে বিক্রয়ের ওপর একটি নির্দিষ্ট হারে কমিশন পাওয়া। মানে যত বেশি প্রডাক্ট সেল করতে পারবেন তত বেশি কমিশন পাবেন। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে হলে আপনাকে নিস সিলেক্ট, প্রডাক্ট নির্বাচন, মার্কেটিংসহ নানা দিক রপ্ত করতে হবে।

মোটকথা, আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিংয়ে সফল হতে চান তাহলে আপনাকে ধৈর্য ধরে লেগে থাকতে হবে এবং চেষ্টা থাকতে হবে।

সূত্র: যুগান্তর

Sharing is caring!

Leave a Comment