যানযটের ইতিবাচক দিক

যানযটের ইতিবাচক দিক

  • অদ্রিক হাসান

যানজট ঢাকা শহরের এখন একটি স্বাভাবিক চিত্র। সারা দেশে শহরে বসবাসকারী মোট জনসংখ্যার ৩২ শতাংশ মানুষ এই ঢাকা নগরীতে বাস করছে। প্রতিদিন নতুন করে গড়ে ১ হাজার ৭০০ মানুষ ঢাকায় আসছে, বছর শেষে যার সংখ্যা দাঁড়ায় ৬ লাখ ২০ হাজার। গবেষণায় দেখা যায়, ঢাকা মহানগরীর জনসংখ্যা বিগত ৩৫ বছরে ৫ গুণ বেড়েছে। নগরীতে যানবাহনের চাহিদার তুলনায় জোগান অত্যন্ত সীমিত। এই সীমিত যানবাহনের সত্ত্বেও যানজট এখন ঢাকাবাসীর জন্য বিরাট এক হুমকির কারণ। বিশ্বব্যাংকের তথ্যমতে, যানজটের কারণে রাজধানী ঢাকায় প্রতিদিন ৩২ লাখ কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে যার ক্ষতির পরিমাণ বছরেপ্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা। কি অবাক হচ্ছেন? চিন্তার কিছু নেই এর মধ্যে আপনার টাকার ভাগও রয়েছে বিনষ্ট সমেয়ও রয়েছ বিশাল অংশীদার। এই শহরে এখন ঘণ্টায় গড়ে প্রায় সাত কিলোমিটার গতিতে চলছে যানবাহন। বিশ্বব্যাংক বলছে, এভাবে চলতে থাকলে আর কিছুদিন পর হেঁটেই গাড়ির আগে যেতে পারবে মানুষ।

এখন কথা হচ্ছে জ্যামে বসে থেকে টাকার অপচয় রোধ করা না গেলেও সময়ের সঠিক ব্যবহার আপনি করতে পারবেন এবং সেটার অন্যতম উপায় হচ্ছে জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে। আমরা জ্যামে বসে হরহামেশাই ফেসবুকিং করি সেখান থেকে শিখতে পারলে ভাল তবে বই পড়া হতে পারে সর্বোত্তম পন্থা। প্রতিদিন যদি আপনি কম করে হলেও ১ ঘন্টা জ্যামে বসে থাকেন তাহলে একটি বইয়ের ২০ পৃষ্ঠা খুব সহজেই পড়তে পারবেন। কর্মদিবস ২৬দিন হিসাব করলে মাসে ৫২০ পৃষ্ঠা এবং এভাবে আপনি বছরে ২০০ পৃষ্ঠার ২৪টির বেশি বই পড়ে শেষ করতে পারেন খুব সহজে।

অনেকেই মনে করে থাকেন ঝাঁকিতে বই পড়লে হয়তো চোখের ক্ষতি হয়। অতিরিক্ত ঝাঁকুনিতে চোখের উপর কিছুটা চাপ পড়ে একথা সত্য। তবে রাস্তার বায়ু দূষণকারী কালো ধোঁয়া আর ধুলোবালি আরও বেশি ক্ষতি করছে আমাদের তাই বলে কি আর বাসায় বসে থাকতে পারব? তবে অতিরিক্ত ঝুঁকিপূর্ণ রাস্তা হলে পড়া থামিয়ে সতর্ক থাকাতেই হবে।

পাল্টাচ্ছে দৃশ্যপট

বাসে বসে বই পড়ার সুযোগ করে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সোশ্যাল চেইন ফর ডেভেলপমেন্ট (এসসিডি) নামের একটি সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।সংগঠনটি চালু করেছে ‘বইবন্ধু’ শীর্ষক একটি প্রকল্প। এই প্রকল্পের আওতায় গাজীপুর থেকে আজিমপুর পথে চলাচলকারী ভিআইপি পরিবহনের বাসগুলোতে বই সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। বইবন্ধু পরিবহন পাঠাগারের মাধ্যমে বাসের যাত্রীরা পাবেন বিনা মূল্যে বই পড়ার সুযোগ। এই পাঠাগারের স্লোগান ‘বই প্রাণকে করে শাশ্বত আর মনকে করে উন্নত’। প্রাথমিকভাবে ভিআইপি পরিবহনের ২০টি বাসে পাঠাগার স্থাপন করা হবে।

গত ২৭ জানুয়ারি আজিমপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বইবন্ধু পরিবহন পাঠাগারের উদ্বোধন করেন সাংসদ কাজী রোজী। তিনি বলেন, বই হলো মনের উদ্যান, সেই উদ্যানে প্রবেশ করতে হবে। এ ধরনের উদ্যোগ জনগণের মানসিক বিকাশে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।

সূত্র: রকমারি ডটকম ও প্রথম আলো

Sharing is caring!

Leave a Comment