দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের ‘টকিং বুক’

দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের ‘টকিং বুক’

  • বিজ্ঞান প্রযুক্তি ডেস্ক

‘ডেইজি স্ট্যার্ন্ডাড এক্সসেসেবল রিডিং মেটারিয়াল’ বা ‘মাল্টিমিডিয়া টকিং বুক’-এর উদ্যোক্তা ভাস্কর ভট্টাচার্য। তিনি বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর কার্যলয়ে এক্সসেস টু ইনফরমেশন বা এটুআই প্রকল্পের ন্যাশনাল কনসালটেন্ট এক্সসিসিবিলিটি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এটুআইএর এই ‘টকিং বুক’ বাস্তবায়ন করছে চট্টগ্রামের স্থানীয় উন্নয়ন সংস্থা ইপসা।

এই বিষয় নিজেও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ভাস্কর বলেন, যেহেতু আমি নিজে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী সেহেতু আমি চাইতাম আমার মতো সকল দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী যেন বই পড়তে পারে। আমার ছোট মেয়ে প্রথম শ্রেণিতে পড়ছে। সে নতুন ক্লাসের নতুন বই এনে আমাকে পড়তে বলতো, আমি বই পড়তে পারতাম না, বলতাম মার কাছে যাও। এ  থেকেই আমার মনে হয় এমন কিছু করা যায় না যাতে সব দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী বইগুলো পড়তে পারে।

সে অনুযায়ী আমি প্রথম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ‘টকিং বই’ করার উদ্যোগ গ্রহণ করি। এখন আমরা দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত সব বই ‘টকিং বই’ করছি। ভাস্কর বলেন, দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীরা যেমন বইটি পড়তে পারবে তেমন বাক ও শ্রবন প্রতিবন্ধীও এই বই পড়তে পারবে। এটি একটি অডিও মাল্টিমিডিয়া টকিং বুক। এক বছর সময় লাগে ভাস্করের এ কাজ সম্পূর্ণ করতে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র ভাস্কর  এটুআই’র সকল কার্যক্রমকে প্রতিবন্ধী বান্ধব করার কাজও করছেন। এখন ব্যস্ত আছেন একটি অফলাইন অনলাইন এক্সসেসেবল ডিকসনারী এবং এমব্রয়ড এপ্লিকেশন করার কাজে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে মাষ্টার্স করা ভাস্কর ইত্তেফাককে বলেন, ২০০২ সালে তিনি যখন কাজ শুরু করেন, তখন একজন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী কাজ করতে পারে তা মানুষ বিশ্বাস করতে পারতো না। আজ তার কর্মদক্ষতাই প্রমাণ করে এক্সসেসিবিলিটি থাকলে প্রতিবন্ধীতা কোন সমস্যাই না। আজ কতশত প্রতিবন্ধী নিজের অবস্থান তৈনি করছে, সমাজের তাদের কাজের গ্রহণযোগ্যতা বাড়ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

ইতিহাসে পড়াশুনা করে কিভাবে তথ্য-যোগাযোগ প্রযুক্তিকে পেশা হিসেবে নিলেন এমন প্রশ্ন করলে ভাস্কর হেসে বলেন, ২০০২ -২০০৩ সালে তিনি জাপানে ড্রাফটিং লিডারসিপ ট্রেনিং করেন। এই টেনিংই তার জীবন বদলে দেয়। তার বাবা-মা তাকে বিশ্বাস করেছেন তিনি পারবেন। তাই তার দৃষ্টিসম্পন্ন ভাইয়ের চেয়েও তাকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে পড়াশুনা করিয়েছেন।  ভাস্কর আরও বলেন, এখন ৬০ শতাংশ ওয়েবসাইটে প্রতিবন্ধীরা প্রবেশ করতে পারছে; যা দশ বছর আগে ১০ শতাংশও্ ছিল না। তাই মানুষ প্রতিবন্ধী বান্ধব হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তিনি মনে করেন সকল প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট প্রতিবন্ধী বান্ধব করতে সরকারের নীতিমালা জরুরি।favicon59-4

Sharing is caring!

Leave a Comment