ডিআইইউ ফার্মা ক্যারিয়ার এক্সপো ২০১৮ : দুই দিনের বর্ণিল আয়োজন

ডিআইইউ ফার্মা ক্যারিয়ার এক্সপো ২০১৮ : দুই দিনের বর্ণিল আয়োজন

  • মারুফ ইসলাম

বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে দুই দিনব্যাপী (৩ ও ৪ ফেব্রুয়ারি) ‘ডিআইইউ ফার্মা ক্যারিয়ার ফেস্ট ২০১৮’। ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ফার্মেসি বিভাগ ও বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজের (বাপি) যৌথ উদ্যোগে এই ক্যারিয়ার এক্সপো অনুষ্ঠিত হয়। ডিআইইউ ফার্মা ক্যারিয়ার এক্সপোতে ক্যারিয়ার ডেভলপমেন্ট সেন্টার ও জবস বিডি সহযোগী অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করে। বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন এমপি, প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭১ মিলনায়তনে এ ফেস্টের উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজের মহাসচিব এস এম শফিউজ্জামান। বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইউসুফ মাহবুবুল ইসলাম, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম মাহবুব উল হক মজুমদার ও ফার্মেসি বিভাগের প্রধান মো. মোস্তাফিজুর রহমান। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল হক, অ্যালাইড হেলথ সায়েন্স অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আহমদ ইসমাইল মোস্তফা, স্টুডেন্টস অ্যাফেয়ার্সের পরিচালক সৈয়দ মিজানুর রহমান, ক্যারিয়ার ডেভলপমেন্ট সেন্টারের পরিচালক আবু তাহের খানসহ বিভিন্ন বিভাগের ডিন, বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তাগণ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ফার্মেসি বিভাগের প্রভাষক নাহিয়ান ফাইরোজ ফাহিম।

প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিকে ফুল দিয়ে বরণ করা হচ্ছে।

দুই দিনব্যাপী ফার্মা ক্যারিয়ার ফেস্টে বাংলাদেশে ঔষধপণ্য ব্যবস্থাপনা, ঔষধ খাতে পেশাগত নিয়োগপ্রাপ্যতা, সঠিক পেশা নির্বাচন বিষয়ক সেমিনার, কর্মশালা, ক্যারিয়ার বিষয়ক কথামালা ও প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। দেশের শীর্ষস্থানীয় ২১টি ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিস এ ক্যারিয়ার ফেস্টে অংশগ্রহণ করে।

উদ্বোধনের আয়োজন

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সিরাজু ইসমাইল ইসা। এরপর ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় মূল অনুষ্ঠান। প্রথমেই ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির থিম সংগীত। এরপর অতিথিরদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়ার পালা। তারপর ফার্মেসি বিভাগের তৈরি করা একটি ভিডিও প্রামাণ্যচিত্র দেখানো হয়, যেখানে ফুঁটে ওঠে ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থীদের সাফল্য ও অগ্রযাত্রা।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করছেন ফার্মেসি বিভাগের প্রধান মো. মোস্তাফিজুর রহমান।

প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন শেষে মঞ্চে আসেন ফার্মেসি বিভাগের প্রধান মো. মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি অতিথিদের উদ্দেশে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন। মো. মোস্তাফিজুর রহমান তার স্বাগত বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশের ফার্মেসি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থীদের একটি শক্তিশালী সম্পর্ক তৈরির উদ্দেশ্যেই এ ক্যারিয়ার এক্সপোর আয়োজন করা হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি এই ক্যারিয়ার এক্সপো চাকরিদাতা এবং চাকরি প্রত্যাশী উভয়ের জন্যই সুযোগ তৈরি করবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদান করছেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম মাহবুব উল হক মজুমদার।

এরপর ফার্মা এক্সপো সম্পর্কে নিজের অভিমত তুলে ধরেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম মাহবুব উল হক মজুমদার। তিনি বলেন, বাংলাদেশে নিবন্ধিত ওষুধ কোম্পানি রয়েছে ২৫০টি এবং খুচরা ওষুধ বিক্রেতা ফার্মেসি রয়েছে ১ লাখ ৭ হাজার ৪৪৫টি। এই সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এ সময় তিনি বলেন, ফার্মাসিউটিক্যালস শিল্প বাংলাদেশে দ্বিতীয় বৃহত্তম কর প্রদানকারী শিল্প। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ১৫১টি দেশে ফার্মেসির কাচামাল রপ্তানি করে। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওষুধ শিল্পকে ২০১৮ সালের বর্ষপণ্য ঘোষণা করেছেন।  অতএব, বলার অপেক্ষা রাখে না যে এই শিল্পের সম্ভাবনা দিনকে দিন বাড়ছে।

ফার্মেসি শিল্পে দক্ষ ও মেধাবী জনবল সরবরাহের লক্ষ্যে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ২০০৮ সালের নভেম্বর মাসে ফার্মেসি বিভাগ চালু করে বলে জানান এস এম মাহবুব উল হক মজুমদার। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদেরকে প্রায়োগিক জ্ঞানে সমৃদ্ধ করতে শুরু থেকেই ফার্মেসি বিভাগে অত্যাধুনিক ল্যাবরেটরি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন বিশেষ অতিথি এস এম শফিউজ্জামান।

উপ-উপাচার্যের পর বক্তব্য দেন বিশেষ অতিথি এস এম শফিউজ্জামান। তিনি বলেন, বাংলাদেশে যখন বেসরকারি উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হতে লাগল, তখন বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ই প্রয়োজনীয় শিক্ষক ও ল্যাবরেটরি ছাড়াই ফার্মেসি বিভাগ খোলা শুরু করল। কিন্তু ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় ব্যতিক্রম। বিশ্ববিদ্যালয়টি ‍শুরু থেকেই ফার্মেসি বিভাগে একটি অত্যাধুনিক ল্যাবরেটরি স্থাপন করেছে। আমি দেখতে পাচ্ছি, এখানে অনেক সুদক্ষ শিক্ষকও রয়েছেন। সুতরাং এখান থেকে যেসব শিক্ষার্থী পাশ করে বের হয় তারা নিঃসন্দেহে অনেক মেধাবী ও দক্ষ। এসময় তিনি সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে বলেন, এমনভাবে গ্রাজুয়েট তৈরি করুন যেন তারা পাশ করে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো তাদেরকে চাকরি দেওয়ার জন্য ডেকে নেয়।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, দেশে এবং দেশের বাইরে ফার্মেসি শিল্পে আপনাদের জন্য অনেক সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ১৫১টি দেশে ওষুধ রপ্তানি করে। ওইসব দেশে আমাদের তরুণরা চাকরি করছে। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ফার্মাসিউটিক্যালস ইন্ডাস্ট্রিজের পক্ষ থেকে মেধাবী তরুণদের ট্রেনিং দিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাঠানো হচ্ছে। সুতরাং আপনারা যারা ফার্মেসি বিভাগে পড়ছেন তাদের জন্য সর্বত্র চাকরির দ্বার উন্মুক্ত রয়েছে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে অনুপ্রাণিত শিক্ষার্থীরা

প্রধান অতিথির বক্তব্যে নাজমুল হাসান পাপন বলেন, কোনো কিছু করতে গেলে প্রথমে নিজের ওপর আস্থা রাখতে হয়। নিজেই নিজেকে বলতে হয় যে আমি পারব। যে কাজ পারবেন না, সে কাজ নিয়ে মাথা ঘামাবেন না। মনে রাখা উচিত যে সবাই সবকিছু পারে না। তাই কাজ শুরু করার আগেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে আমি কাজটা পারব কি পারব না। যদি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন কাজটা করবেন, তাহলে সিদ্ধান্তে অবিচল থাকুন। সিদ্ধান্তে অটল থাকাটা ক্যারিয়ারের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা ভবিষ্যতের কর্ণধার। আপনাদেরকে লক্ষ্যে অবিচল থাকা শিখতে হবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন প্রধান অতিথি নাজমুল হাসান পাপন, এমপি।

নাজমুল হাসান পাপনের অনুপ্রেরণাদায়ী বক্তব্যের ভিডিও দেখুনhttps://www.youtube.com/watch?v=mN6MdMCrzwE

ফার্মেসি শিল্পকে দ্রুত বর্ধনশীল একটি খাত উল্লেখ করে নাজমুল হাসান পাপন আরও বলেন, বাংলাদেশে ওষুধের যে চাহিদা রয়েছে তার ৯৫ শতাংশ নিজেরাই পূরণ করতে পারছি। এটি আমাদের দেশের এক বিস্ময়কর সাফল্য। বিস্ময়কর এজন্য বলছি যে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও সিঙ্গাপুরের মতো উন্নত দেশকেও বিদেশ থেকে প্রচুর ওষুধ আমদানী করতে হয়। সেখানে আমরা নিজের দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করি।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন প্রধান অতিথি নাজমুল হাসান পাপন, এমপি।

এ সময় ওষুধ রপ্তানির শুরুর দিকের গল্প শোনান নাজমুল হাসান। তিনি বলেন, আমি ক্যারিয়ার শুরু করেছিলাম বেক্সিমকো ফা্র্মাতে বিপণন বিভাগে। তখন ফার্মাসিউটিক্যালস শিল্পের মার্কেটিং বিভাগ যারা পরিচালনা করতেন তাদের প্রায় সবার শিক্ষাগত যোগ্যতা ছিল ফার্মেসি এবং এমবিএ। আমিই একমাত্র ব্যক্তি, ‍যে শুধু এমবিএ ডিগ্রি নিয়ে ফার্মেসি সেক্টরে মার্কেটিংয়ের চাকরি শুরু করেছি। সুতরাং চাকরিটা ছিল আমার জন্য চ্যালেঞ্জিং। আমার শিক্ষানবীশ কাল ছিল ছয় মাস। ছয় মাস পর পরীক্ষা হবে, সেই পরীক্ষায় ৮৫ শতাংশ নম্বর না পেলে চাকরি থাকবে না। ভীষণ মোটা মোটা সব বই পড়তে বলা হলো পরীক্ষার জন্য। সবই ফার্মেসি সংক্রান্ত। কয়েকদিন পড়ার পর মনে হলো কিছুই মনে থাকে না। পাগল হয়ে যাচ্ছি মনে হয়। বিরক্ত হয়ে পড়া ছেড়ে দিলাম। যাইহোক, পরীক্ষার এক সপ্তাহ আগে আবার একটু পড়াশোনা শুরু করলাম। তারপর পরীক্ষায় বসলাম এবং আল্লাহর রহমতে ৯২ শতাংশ নম্বর পেয়ে পাশ করলাম। এরপর আমাকে দায়িত্ব দেয়া হলো ওষুধ রপ্তানির ব্যপারে কাজ করার জন্য। এটা ১৯৯৯ সালের কথা। আমি দায়িত্ব নিয়ে রাশিয়া গেলাম।

রাশিয়া গিয়ে দেখা করলাম স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে। তাকে বললাম, আমি এসেছি বাংলাদেশের ওষুধ নিবন্ধনের জন্য। তিনি অবাক হয়ে বললেন, আপনারা ওষুধ তৈরি করবেন আর সেই ওষুধ আমরা খাব? বলেন কি? তারপর তিনি ওষুধ নিবন্ধনের নানা প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানালেন। এই প্রক্রিয়ার একটি প্রধান কাজ হচ্ছে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল। এসব দেখে ভাবনায় পড়ে গেলাম। বাংলাদেশে তো ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল হয় না। তাকে বললাম, আমার দেশে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল হয় না, কিন্তু আমাদের ওষুধ ভালো। আপনি পরীক্ষা করে দেখতে পারেন। তিনি রাজি নন। হঠাৎ আমার জেদ চেপে গেল। তাকে বললাম, আপনার দেশের ছয়টি শীর্ষস্থানীয় হাসপাতালে আগামী ছয় মাস আমি বিনামূল্যে ওষুধ সরবরাহ করব। আপনি ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল দিন। রোগীর ওপর যত রকমের পরীক্ষা নিরীক্ষা করা দরকার করুন। তিনি অবাক হয়ে বললেন, ফ্রি ওষুধ দিবেন? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি রাজি হয়ে গেলেন। ফেরার সময় ভাবলাম চাকরিটাই থাকে কি না। উর্ধ্বতন কারো সঙ্গে কোনো কথা না বলে এতবড় একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এখন আমার চাকরি থাকে কি না কে জানে!

যাই হোক, দেশে ফেরার পর অফিসকে জানালাম। অফিসের কর্তারা আমার সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানালেন। তারপর রাশিয়াতে ওষুধ পাঠালাম। আড়াই মাস পর রাশিয়া আমাকে জানালো যে তোমাদের ওষুধ ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে উত্তীর্ণ হয়েছে। আমরা সরকারিভাবে তোমাদের রেনিটিডিন ওষুধটা কিনতে চাই। আমি তখন বললাম, অত্যন্ত খুশির খবর। কিন্তু এই আড়াই মাসে আমাদের ওষুধের দাম তো বেড়ে গেছে। এখন আট টাকার কমে তো বিক্রি করতে পারব না। এখানে বলে রাখি, তখন দেশে রেনিটিডিন বিক্রি হতো দুই টাকা করে। তো এভাবেই রাশিয়াতে ওষুধ বিক্রির মাধ্যমে শুরু হলো প্রথম বিদেশে ওষুধ রপ্তানি। এভাবে আমি আমার ক্যারিয়ার শুরু করেছিলাম।

নাজমুল হাসান পাপনের বক্তব্য মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুনছেন মিলনায়তনভর্তি দর্শক-শ্রোতা।

নাজমুল হাসান বলেন, ওষুধ রপ্তানির সবচেয়ে জটিল প্রক্রিয়া হচ্ছে ওষুধের নিবন্ধন। সেদিক দিয়ে বাংলাদেশের সাফল্য ঈর্ষণীয়। আমি যে প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতাম সেই প্রতিষ্ঠানেই চার শতাধিক ওষুধের নিবন্ধন রয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। আমাদের দেশের অন্যান্য ওষুধ প্রতিষ্ঠানগুলোরও অনেক ওষুধ নিবন্ধিত হয়েছে এবং হচ্ছে। এটি একটি বিরাট বাজার। বলার অপেক্ষা রাখে না, গার্মেন্টস শিল্পের পরই বিদেশে আমাদের সবচেয়ে বড় বাজার হচ্ছে এই ওষুধ শিল্প।

এই শিল্পে ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ অফুরন্ত উল্লেখ করে নাজমুল হাসান বলেন, এটা এমন এক শিল্প যেখানে ফার্মাসিস্ট, কেমিস্ট, মাইক্রোবায়োলজিস্ট, প্রকৌশলী থেকে শুরু করে বিভিন্ন পদের জনবল প্রয়োজন হয়। কমপক্ষে এগারো থেকে তেরোটি চেক পয়েন্ট পেরিয়ে একটি ওষুধ তৈরি হয়। আর এই প্রতিটি চেক পয়েন্টে প্রচুর দক্ষ কর্মচারীর প্রয়োজন হয়।

নাজমুল হাসান বলেন, আপনারা শুনে অবাক হবেন যে, ২০১৫ সালের এইচএসবিসি ট্রেড ইনেডেক্স কনফিডেন্স তালিকায় যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম হয়েছে বাংলাদেশের ওষুধ। এরকম আরো অনেক অর্জন রয়েছে আমাদের। সুতরাং বাংলাদেশ যে এগিয়ে যাচ্ছে সে ব্যাপারে কারো কোনো সন্দেহ নেই। বাংলাদেশকে আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে দক্ষ মানবসম্পদ দরকার। তাই নিজেদেরকে দক্ষ মানবসম্পদরূপে গড়ে তুলতে শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান নাজমুল হাসান। তিনি বলেন, আপনারাই দেশের ভবিষ্যৎ। আপনারাই আগামীর নেতা। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, অর্থনীতি, রাজনীতি থেকে শুরু করে সর্বক্ষেত্রে আপনারাই নেতৃত্ব দেবেন। সুতরাং নিজেকে দক্ষরূপে তৈরি করুন।

উদ্বোধন শেষে স্টল পরিদর্শন করছেন নাজমুল হাসান পাপন।

নতুন প্রজন্মের ব্যাপারে আমি অত্যন্ত আশাবাদী উল্লেখ করে নাজমুল হাসান বলেন, আমাদের তরুণরা নানা ক্ষেত্রে বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করছে। তাদের সাফল্য দেখে বিস্মিত গোটা পৃথিবী। এই প্রজন্ম সম্পূর্ণ ভিন্ন ধাঁচের। এরা পরাজিত হতে নারাজ। এসময় তিনি ক্রিকেটার মুস্তাফিজের উদাহরণ দিয়ে বলেন, বাংলাদেশের এক প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে উঠে এসে সারা পৃথিবীকে কাঁপিয়ে দিলো মুস্তাফিজ। মিরাজ যে ছোট্ট একটা ঘরে থাকত সেখানে ব্যাট-বল রাখার মতো জায়গা ছিল না। সেই মুস্তাফিজ-মিরাজরা যখন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন দলগুলোর বিরুদ্ধে মাঠে নামে খেলতে, তখন একটুও ভয় পায় না। এই প্রজন্মকে খুব কাছ থেকে দেখে আমি জেনেছি, এরা অনেক বেশি মেধাবী, আত্মপ্রত্যয়ী এবং চালাক। দ্বিতীয় বিষয় হচ্ছে, এরা অসম্ভব সাহসী। কাউকে ভয় পায় না। কোনো কিছুতে ভয় পায় না, যেটা ক্রিকেটের ‍উদাহরণ দিয়ে একটু আগে বললাম। এবং তৃতীয় বিষয়, যেটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সেটা হচ্ছে, এরা দেশকে ভালোবাসে। এই তিনটি গুণের সমন্বয় যে প্রজন্মের মধ্যে রয়েছে তারা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবেই যাবে। এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই।

প্রধান অতিথি নাজমুল হাসান পাপনের হাতে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির স্যুভেনির তুলে দিচ্ছেন ড. মো. সবুর খান।

সফল হওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদেরকে কয়েকটি পরামর্শ দেন নাজমুল হাসান। তিনি বলেন, পৃথিবী এখন ভীষণ প্রতিযোগিতাপূর্ণ একটি জায়গা। এই প্রতিযোগিতায় টিকতে হলে নিজের দক্ষতা বাড়ানো ছাড়া উপায় নেই। আর নিজের দক্ষতা, মেধা ও যোগ্যতা বাড়াতে হলে পড়াশোনা করতে হবে, রেজাল্ট ভালো করতে হবে এবং সমগ্র পৃথিবীর আপডেট জ্ঞান রাখতে হবে।

প্রধান অতিথি নাজমুল হাসান পাপনকে দেয়া ক্রেস্টের প্রতিকৃতি।

আর সফল হওয়ার জন্য যেটা প্রয়োজন সেটা হচ্ছে লক্ষ্যে অবিচল থাকা। শিক্ষক ও গুরুজনদের কথা শুনতে হবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন নাজমুল হাসান। তিনি বলেন, আপনি যতই মেধাবী হোন না কেন আপনার একজন দিক নির্দেশক লাগবে। একজন কোচ কিংবা মেন্টর অথবা শিক্ষক হতে পারেন আপনার সেই দিক নির্দেশক।

বিশেষ অতিথি এস এম শফিউজ্জামানের হাতে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ক্রেস্ট তুলে দিচ্ছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইউসুফ এম ইসলাম।

প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে তার হাতে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির পক্ষ থেকে ক্রেস্ট তুলে দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খান এবং বিশেষ অতিথির হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইউসুফ মাহবুবুল ইসলাম।

সভাপতির বক্তব্যে উদ্যোক্তা হওয়ার আহ্বান

সভাপতির বক্তব্যে ড. মো. সবুর খান বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ফার্মেসি শিল্প অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই যে বাংলাদেশের ওষুধ বিশ্ববাজারে একটা সম্মানজনক অবস্থান তৈরি করেছে। বাংলাদেশের মানুষ ধীরে ধীরে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ছে এবং অদূর ভবিষ্যতে এ দেশের মানুষ বিশ্বের বড় বড় প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিজেদের অবস্থান তৈরি করতে পারবে। ইতিমধ্যে ফার্মেসি সেক্টরের মেধাবী মানুষেরা সেটা প্রমাণ করেছেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতি হিসেবে বক্তব্য দিচ্ছেন ড. মো. সবুর খান।

বাংলাদেশে হাজারো সমস্যা সত্ত্বেও উদ্যোক্তাবৃত্তির ক্ষেত্রে এ দেশ বিশ্বের কাছে মডেল হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন ড. মো. সবুর খান। তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি যে কয়টি গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে উদ্যোক্তাবৃত্তি। উদ্যোক্তাদের হাত ধরেই এ দেশের ওষুধ শিল্প, গার্মেন্টস শিল্প, চামড়া শিল্পসহ অনেক বড় বড় শিল্প-প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা পেয়েছে।

মো. সবুর খান আরও বলেন, একটা সময় বর্হিবিশ্বে বাংলাদেশের পরিচয় ছিল শ্রমিক প্রেরণকারী দেশ হিসেবে। এখন আর সেই অবস্থা নেই। কারণ বাইরের দেশে এখন বাংলাদেশের প্রচুর সংখ্যক ফার্মাসিস্ট, কেমিস্ট ও মাইক্রোবায়োলজিস্ট কাজ করছেন। দেশের ভেতরেও ওষুধ শিল্প বিপ্লব সাধন করছে। তাদের কারণেই গার্মেন্টস শিল্পের পর ওষুধ শিল্প এখন বৃহত্তম বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের খাত হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। এই খাতকে আরও সমৃদ্ধ করতে প্রচুর সংখ্যক দক্ষ ফার্মাসিস্ট তৈরি করতে হবে বলে মন্তব্য করেন মো. সুবর খান।

ড্যাফোডিল চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশ প্রাকৃতিক দুর্যোগের দেশ হিসেবে পরিচিত হলেও এই দুর্যোগই কখনো কখনো সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেয়। উদাহরণ হিসেবে তিনি আইসিডিডিআরবি’র কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে কাজ করে আইসিডিডিআর’বি সারা বিশ্বের প্রশংসা কুড়িয়েছে। সুতরাং যে কোনো সমস্যার অন্তরালেই সম্ভাবনা লুকিয়ে থাকে বলে অভিমত দেন মো. সবুর খান। এজন্য দূরদৃষ্টি এবং কঠোর পরিশ্রমের মানসিকতা নিয়ে কাজ করতে শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে ধন্যবাদজ্ঞাপক বক্তব্য প্রদান করছেন ডিআইইউ উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইউসুফ মাহবুবুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে ধন্যবাদজ্ঞাপক বক্তব্য প্রদান করেন অধ্যাপক ড. ইউসুফ মাহবুবুল ইসলাম। তিনি অনুষ্ঠানে আসার জন্য প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান এবং এরকম সময়পোযোগী অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে উপাচার্য বলেন, এই ক্যারিয়ার এক্সপো থেকে শিক্ষা নিতে হবে। শিক্ষা নিতে হবে অতিথিদের বক্তব্য থেকেও। প্রধান অতিথি নাজমুল হাসান পাপন যেমন ক্যারিয়ারের শুরুতে নিজেকেই চ্যালেঞ্জ করেছিলেন, ঠিক সেভাবে নিজের উন্নতির জন্য নিজেকেই চ্যালেঞ্জ করতে হবে। নিজের প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস রেখে কঠোর পরিশ্রম করলে জীবনে সফলতা আসবেই বলে মন্তব্য করেন ডিআইইউ উপাচার্য।

দ্বিতীয় দিন এবং সমাপনী অনুষ্ঠান

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ৭১ মিলনায়তনে ৪ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় দুই দিনব্যাপী ‘ডিআইইউ ফার্মা ক্যারিয়ার ফেস্ট ২০১৮-এর সমাপনী অনুষ্ঠান। সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ঔষধ প্রশাসনের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মোস্তাফিজুর রহমান। বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইউসুফ মাহবুবুল ইসলাম, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবু উল হক মজুমদার, অ্যালাইড হেলথ সায়েন্সস অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আহমেদ ইসমাইল মোস্তফা ও ফার্মেসি বিভাগের প্রধান মো. মোস্তাফিজুর রহমান বক্তব্য রাখেন। এছাড়া অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক ড. গোলাম মওলা চৌধুরী, ক্যারিয়ার ডেভলপমেন্ট সেন্টারের পরিচালক আবু তাহের খান ও বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় প্রধান ও শিক্ষার্থীবৃন্দ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থীতাসনিম তৃণা।

একমঞ্চে সমাপনী অনুষ্ঠানের অতিথিরা।

অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থী মো. সোয়েব হাসান। এরপর জাতীয় সংগীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় মূল অনুষ্ঠান। প্রথমেই ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির থিম সংগীত। এরপর অতিথিদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়ার পালা। তারপর ফার্মেসি বিভাগের তৈরি করা একটি ভিডিও প্রামাণ্যচিত্র দেখানো হয়, যেখানে ফুঁটে ওঠে ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থীদের সাফল্য ও অগ্রযাত্রা।

সমাপনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মেজর জেনারেল মো. মোস্তাফিজুর রহমানকে ফুল দিয়ে বরণ করা হচ্ছে।

প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন শেষে মঞ্চে আসেন ফার্মেসি বিভাগের প্রধান মো. মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি অতিথিদের উদ্দেশে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন। মো. মোস্তাফিজুর রহমান তার স্বাগত বক্তব্যে বলেন, দুই দিনের ফার্মা এক্সপো সফলভাবে শেষ হলো আজ। এই দুই দিন বিভিন্ন সেমিনার, কর্মশালা ও অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ফার্মেসি শিল্পের কর্তাব্যক্তিরা ও ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এক জায়গায় মিলিত হতে পেরেছেন। এই মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হওয়ার কারণে দুটি পক্ষই উপকৃত হয়েছেন বলে মনে করি। শিক্ষার্থীরা জানতে পেরেছেন তাদের ক্যারিয়ার সম্পর্কে আর ফার্মেসি প্রতিষ্ঠানগুলো জানতে পেরেছে শিক্ষার্থীদের মেধা, যোগ্যতা ও প্রস্তুতি সম্পর্কে। অনুষ্ঠানটি সফল করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান মো. মোস্তাফিজুর রহমান এবং ভবিষ্যতে আরো বড় পরিসরে ফার্মা এক্সপো আয়োজন করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

সমাপনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দিচ্ছেন ফার্মেসি বিভাগের প্রধান মো. মোস্তাফিজুর রহমান।

এরপর শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন অ্যালাইড হেলথ সায়েন্সস অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আহমেদ ইসমাইল মোস্তফা। তিনি বলেন, দুই দিনের ফার্মা এক্সপো থেকে আমাদের শিক্ষার্থীরা অনেক কিছু শিখতে পেরেছে। এই শিক্ষা তাদের ক্যারিয়ারজীবনে কাজে লাগবে বলে আশা করি। আমাদের শিক্ষার্থীরা ইতিমধ্যে জেনেছে যে বাংলাদেশের প্রায় ১২০০ ওষুধ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নিবন্ধিত। সেসব দেশে আমাদের ওষুধ রপ্তানি হয়। আমাদের ওষুধ শিল্প এখন দেশের দ্বিতীয় প্রধান করপ্রদানকারী খাত। এই শিল্প দিন দিন বড় হচ্ছে। সুতরাং এই শিল্পে ক্যারিয়ার গড়ার সম্ভাবনা ও নিশ্চয়তাও বাড়ছে। এসময় তিনি শিক্ষার্থীদেরকে ভবিষ্যতের জন্য নিজেকে প্রস্তুত হতে পরামর্শ দেন এবং একইসঙ্গে ফার্মেসি শিল্পে উদ্যোক্তা হতে আহ্বান জানান।

সমাপনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন অ্যালাইড হেলথ সায়েন্স অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আহমেদ ইসমাইল মোস্তফা।

শিক্ষার্থীদেরকে অনুরূপ পরামর্শ দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম মাহবুব উল হক মজুমদার। তিনি বলেন, এই বিভাগ থেকে ইতিমধ্যে চার শতাধিক শিক্ষার্থী স্নাতক সম্পন্ন করেছে এবং সাত শতাধিক শিক্ষার্থী স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পড়াশোনা করেছে। যারা পাশ করে বেরিয়ে গেছে তারা খ্যাতনামা সব ফার্মাসিউটিক্যালস প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছে। শিক্ষার্থীদের এই সাফল্যে আমরা নিঃসন্দেহে আনন্দিত। আমরা শিক্ষার্থীদের আরো উত্তরোত্তর সাফল্য চাই, এজন্য এই ফার্মা ক্যারিয়ার ফেস্টের আয়োজন করা হয়েছে—যাতে করে শিক্ষার্থী ও ফার্মাসিউটিক্যালস প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটা যোগসূত্র স্থাপিত হয়।

সমাপনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন উপ-উপাচার্য এস এম মাহবুব ‍উল হক মজুমদার।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি আরো বলেন, ফার্মেসি বিভাগে ৩২জন পূর্ণকালীন শিক্ষকসহ অনেক খন্ডকালীন শিক্ষক আছেন যারা প্রত্যেকের নিজ নিজ ক্ষেত্রে দেশে ও বিদেশে স্বনামধন্য। তাদের সান্নিধ্য পাওয়া নিঃসন্দেহে সৌভাগ্যে বিষয়। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই ‍গুণী শিক্ষদের কাছ থেকে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নিয়ে এবং বিভাগের অত্যাধুনিক ল্যাবরেটরি সুবিধা কাজে লাগিয়ে শিক্ষার্থীরা নিজেদেরকে সর্বোচ্চ যোগ্য হিসেবে গড়ে তুলবে এবং নিজেদের মেধা ও যোগ্যতাকে দেশের উন্নয়নে কাজে লাগাবে।

যা বললেন প্রধান অতিথি

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ঔষধ প্রশাসনের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের ওষুধ শিল্প খুব দ্রুত বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়ছে। এখন বিশ্বের ১৫২টি দেশে বাংলাদেশের ওষুধ রপ্তানি হয়। এই সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি ওষুধ শিল্পের সঙ্গে জড়িত যন্ত্রাংশ উৎপাদনের দিকে নজর দিচ্ছে বাংলাদেশ। কারণ যন্ত্রাংশের বাজার অনেক বড়। প্রায় ২৪ হাজার কোটি টাকার একটি বাজার। এত বড় বাজার ছেড়ে দেয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান এ ব্যাপারে কাজ করছে। ওষুধ প্রশাসনের পক্ষ থেকেও এ ব্যাপারে সব ধরনের চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সমাপনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন প্রধান অতিথি মেজর জেনারেল মো. মোস্তাফিজুর রহমান।

মেজর জেনারেল মো. মোস্তাফিজুর রহমানের অনুপ্রেরণাদায়ী বক্তব্যের ভিডিও দেখুনhttps://www.youtube.com/watch?v=luAY0UYqD4Y

মেজর জেনারেল মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ক্ষেত্রেও আমাদের অনেক কাজ করার সুযোগ আছে। এটাও ফার্মাসিউটক্যালস খাতের একটা বড় জায়গা। ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে কাজ করার জন্য দক্ষ জনবল তৈরি করতে হবে। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ফার্মেসি বিভাগ, ওষুধ শিল্প প্রতিষ্ঠান ও বাংলাদেশ ঔষধ প্রশাসন একসঙ্গে কাজ করলে দ্রুত সফল হওয়া সম্ভব বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সমাপনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন প্রধান অতিথি মেজর জেনারেল মো. মোস্তাফিজুর রহমান।

ওষুধ শিল্পকে আরও উন্নত অবস্থানে নিয়ে যেতে হলে আরো দক্ষ জনবলের দরকার—এমন মন্তব্য করে মেজর জেনারেল মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমরা এখন দেড় শতাধিক দেশে ওষুধ রপ্তানি করি। এই সংখ্যা বাড়াতে হলে প্রথমে দরকার প্রচুর দক্ষ জনবল এবং দ্বিতীয়ত দরকার উন্নত যন্ত্রপাতি। এসব শর্ত পূরণ করার জন্য সরকারসহ সংশ্লিষ্ট বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান মেজর জেনারেল মো. মোস্তাফিজুর রহমান।

মেজর জেনারেল মো. মোস্তাফিজুর রহমান আরও বলেন, ফার্মেসি সেবাকে তৃণমূল পর্যন্ত ছড়িয়ে দিতে হবে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, তৃণমূলে ফার্মেসি সেবা অত্যন্ত নাজুক। সেখানকার ফার্মেসিগুলো চলছে যেন-তেনভাবে। কোথাও কোনো সনদধারী ফার্মাসিস্ট নেই। ফলে ওষুধের ব্যবহার সম্পর্কে কোনো প্রাথমিক জ্ঞান পান না তৃণমূলের মানুষরা। এমনকি শহরের ফার্মেসিগুলোতেও কোনো ফার্মাসিস্ট নেই। এ ব্যাপারে ওষুধ প্রশাসন কাজ করছে বলে জানান মো. মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, এ পর্যন্ত আমরা সাড়ে তিন শ ফার্মেসিতে ফার্মাসিস্ট রাখার ব্যবস্থা করতে পেরেছি। ক্রমান্বয়ে সব ফার্মেসিকে ফার্মাসিস্টের আওতাভুক্ত করা হবে।

প্রধান অতিথি মেজর জেনারেল মো. মোস্তাফিজুর রহমানের বক্তব্য মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে শুনছেন মিলনায়তনভর্তি দর্শক-শ্রোতা।

বাংলাদেশের অসামান্য অগ্রগতি মূলত বেসরকারি উদ্যোগের বদৌলতেই হচ্ছে বলে মনে করেন মেজর জেনারেল মো. মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, বেসরকারি খাতকে আরো বাড়াতে হবে। এজন্য প্রচুর উদ্যোক্তা দরকার। আমাদের তরুণ প্রজন্মকে এখনই সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে ভবিষ্যতে তারা উদ্যোক্তা হবে এবং প্রচুর মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে।

ফার্মেসি বিভাগের পাঠ্যক্রমেও পরিবর্তন আনা জরুরি বলে অভিমত দেন মেজর জেনারেল মো. মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, পৃথিবী দ্রুত বদলে যাচ্ছে। কিন্তু বদলে যাওয়া পৃথিবীর সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারছে না আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। তারা এখনো সনাতন পদ্ধতিতেই শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছে, যে শিক্ষা আমাদের তরুণদের কর্মজীবনে কাজে লাগছে না।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে মেজর জেনারেল মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাংলাদেশে এখন আট শতাধিক ওষুধ কোম্পানি রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে ক্যারিয়ার গড়ার প্রচুর সুযোগ রয়েছে। এ জন্য নিজেকে ছাত্রাবস্থা থেকেই দক্ষরূপে গড়ে তুলতে হবে বলে মন্তব্য করেন মেজর জেনারেল মো. মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, এ ধরনের ফার্মা ফেস্ট শিক্ষার্থীদেরকে ক্যারিয়ার সচেতন করবে। শিক্ষার্থীরা প্রায়োগিক জ্ঞান অর্জন করতে পারবেন বলে অভিমত দেন তিনি।

সমাপনী অনুষ্ঠানে সভাপতি হিসেবে বক্তব্য রাখছেন ড. মো. সবুর খান।

সভাপতির বক্তব্যে ড. মো. সবুর খান বলেন, বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট ও দেশীয় প্রেক্ষাপট বিবেচনায় রেখে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ফার্মেসি বিভাগের পাঠ্যক্রমে পরিবর্তন আনা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা যাতে আধুনিক বিশ্বের প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারে, সেভাবেই তাদেরকে তৈরি করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, ওষুধ শিল্প এখন দ্বিতীয় প্রধান ট্যাক্স প্রদানকারী খাত। খুব দ্রুত এই খাত বিকশিত হচ্ছে। এই শিল্পকে আরও উন্নত করতে হলে নতুন নতুন উদ্ভাবন প্রয়োজন। এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদেরকে আইডিয়া উদ্ভাবনের আহ্বান জানান। শিক্ষকদেরকেও অনুরোধ জানান, তারা যেন শিক্ষার্থীদেরকে নতুন আইডিয়া উদ্ভাবনের জন্য উদ্বুদ্ধ করেন। প্রয়োজনে কোর্সের সঙ্গে ক্রেডিট যোগ করারও পরামর্শ দেন মো. সবুর খান।

ডাক্তাররা রোগীদের নিয়ে ব্যস্ত থাকেন উল্লেখ করে মো. সবুর খান বলেন, ডাক্তারদের সময় নেই রোগীদেরকে ব্যবস্থাপত্র ব্যাখ্যা করার। সুতরাং এ বিষয়ে অ্যাপ তৈরি এবং প্রযুক্তি উন্নয়নের প্রচুর সুযোগ রয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। এ ব্যাপারে শিক্ষার্থীদেরকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। আগামী বছর ফার্মা এক্সপো আরও বৃহৎ পরিসরে আয়োজন করা হবে বলে ঘোষণা দেন মোঃ সবুর খান।

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির পক্ষ থেকে প্রধান অতিথি মেজর জেনারেল মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাতে ক্রেস্ট তুলে দিচ্ছেন ড. মো. সবুর খান।
প্রধান অতিথি মেজর জেনারেল মো. মোস্তাফিজুর রহমানকে দেয়া ক্রেস্টের প্রতিকৃতি।

বক্তব্য শেষে প্রধান অতিথি মেজর জেনারেল মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাতে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির পক্ষ থেকে ক্রেস্ট ও স্যুভেনির তুলে দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খান।

ধন্যবাদসূচক বক্তব্য প্রদান করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইউসুফ মাহবুবুল ইসলাম
অনুষ্ঠান শেষে একমঞ্চে অতিথিবৃন্দ ও অংশগ্রহণকারী ফার্মাসিউটিক্যালস প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিবৃন্দ।

এরপর ধন্যবাদসূচক বক্তব্য প্রদান করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইউসুফ মাহবুবুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমাদের বিভিন্ন সেক্টরে উদ্যোক্তা প্রয়োজন। ফার্মেসি সেক্টরেও নতুন নতুন উদ্যোক্তা প্রয়োজন। নতুন প্রজন্মের এই শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা শেষ করে উদ্যোক্তা হবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন উপাচার্য।

অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের অনুভূতি

ডিআইইউ ফার্মা এক্সপোতে অংশ নেওয়ার অভিজ্ঞা ও মুগ্ধতার কথা অকপটে বলেছেন ফার্মাসিউটিক্যালস প্রতিষ্ঠানের স্টল প্রতিনিধিরা। দুই দিনের এই এক্সপোতে ১৬টি ফার্মাসিউটিক্যালস প্রতিষ্ঠান তাদের স্টল সাজিয়ে বসেছিল।

ফার্মা এক্সপোতে অংশগ্রহণের অনুভূতি জানাচ্ছেন বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের প্রশিক্ষণ বিভাগের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক সায়মা সুলতানা

বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের প্রশিক্ষণ বিভাগের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক সায়মা সুলতানা বলেন, এখানে এসে অনেক কিছু জানা হলো। যেমন জব ফেয়ারের মাধ্যমে নিয়োগ দেয়া, ফার্মেসিতে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের ভাবনা চিন্তা, তাদের ক্যারিয়ার প্ল্যান ইত্যাদি। শিক্ষার্থীরাও আমাদের কাছ থেকে অনেক কিছু জেনেছে। আমি বলব, এই ফার্মা এক্সপোর মাধ্যমে উভয় পক্ষই উপকৃত হয়েছে।

ফার্মা এক্সপোতে অংশগ্রহণের অনুভূতি জানাচ্ছেন ইনসেপটা ফার্মাসিউটিক্যালসের বিপণন কৌশল বিভাগের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান

ইনসেপটা ফার্মাসিউটিক্যালসের বিপণন কৌশল বিভাগের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, এখন অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফার্মেসি পড়ানো হয়। সেখান থেকে বের হওয়া শিক্ষার্থীরা কর্মজীবনে অনেক ভালো করছে। সুতরাং পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে একসময় যে প্রতিতুলনা করা হতো, সেটা আর নেই।

ফার্মা এক্সপোতে অংশগ্রহণের অনুভূতি জানাচ্ছেন স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের বিপণন বিভাগের জেনালে ম্যানেজার আহমেদ কামরুল আলম

স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের বিপণন বিভাগের জেনালে ম্যানেজার আহমেদ কামরুল আলম বলেন, এধরনের এক্সপো করার জন্য প্রথমেই ড্যাফোডিলকে ধন্যবাদ জানাই। এখানে এসে অনেক নবীন ফার্মাসিস্টদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ হয়েছে। এতে আমরা উপকৃত হয়েছি।

অপসোনিন ফার্মাতে চাকরিরত ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির দুই প্রাক্তন শিক্ষার্থী জানাচ্ছেন নিজেদের অনুভূতি।

অপসোনিন ফার্মাতে চাকরি করছেন ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটিরই প্রাক্তন দুই শিক্ষার্থী। তারা তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, কর্মজীবনে প্রবেশ করার পর প্রথম প্রথম সবারই একটু সমস্যা হয়। কিন্তু আমরা সে ধরনের সমস্যায় পড়িনি। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় শিক্ষকরা যেভাবে আমাদের হাতে কলমে শিখেয়েছেন এবং দিক নির্দেশনা দিয়েছেন সেটা চাকরিতে প্রবেশ করার পর খুবই কাজে লেগেছে। ফার্মেসি বিভাগের অনুজ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তারা বলেন, আমরা যারা অগ্রজ শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছি তাদের সঙ্গে অনুজ শিক্ষার্থীদের যোগাযোগ রাখা উচিত। তাহলে কখন কোথায় চাকরির সুযোগ তৈরি হচ্ছে সে সম্পর্কে জানা যায়।

ফার্মা এক্সপোতে অংশগ্রহণের অনুভূতি জানাচ্ছেন অপসোনিন ফার্মার প্রতিনিধি

এরপর অপসোনিন ফার্মার প্রতিনিধি বলেন, অপসোনিনে সর্বশেষ যে নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে সেখানে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির চারজন শিক্ষার্থী রয়েছে। তারা খুবই ভালো করছে।

ফার্মা এক্সপোতে অংশগ্রহণের অনুভূতি জানাচ্ছেন নিউটেক ফার্মাসিউটিক্যালসের প্রতিনিধি

নিউটেক ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের প্রতিনিধি বলেন, ফার্মা এক্সপোতে এসে অসম্ভব ভালো সাড়া পেয়েছি। ফার্মেসি বিভাগের অনেক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমাদের ভাবনা বিনিময় হয়েছে। তারা ফার্মা শিল্প সম্পর্কে যেমন আমাদের কাছ থেকে জেনেছে তেমনি আমরাও তাদের কাছ থেকে জেনেছি যে তারা কিভাবে নিজেকে প্রস্তুত করছে ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ারের জন্য।

ফার্মা এক্সপোতে অংশগ্রহণের অনুভূতি জানাচ্ছেন বিকন ফার্মাসিউটিক্যালসের প্রতিনিধি

বিকন ফার্মাসিউটিক্যালসের প্রতিনিধি বলেন, অত্যন্ত প্রশংসনীয় উদ্যোগ। শিক্ষার্থীদের স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহণ দেখে মনে হচ্ছে তারা ভীষণভাবে অনুপ্রাণিত। ফার্মেসি শিল্পের বিকাশে এ ধরনের এক্সপো নিঃসন্দেহে অনন্য ভূমিকা রাখবে।

ফার্মা এক্সপোতে অংশগ্রহণের অনুভূতি জানাচ্ছেন ফার্মাশিয়া লিমিটেডের প্রতিনিধি

ফার্মাশিয়া লিমিটেডের প্রতিনিধি বলেন, এই ফার্মা এক্সপোর মাধ্যমে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় ও তাদের ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এক ধরনের যোগসূত্র তৈরি হয়েছে। এই সম্পর্ক তৈরি হওয়ার ফলে আমরা দুই পক্ষই উপকৃত হবো বলে মনে করি।

ফার্মা এক্সপোতে অংশগ্রহণের অনুভূতি জানাচ্ছেন জেসন ফার্মাসিউটিক্যালসের প্রতিনিধি

জেসন ফার্মাসিউটিক্যালসের প্রতিনিধি বলেন, শিক্ষার্থীরা যেভাবে সাড়া দিয়েছে এই এক্সপোতে তাতে আমরা অভিভূত। একটা সময় ছিল যখন শিক্ষার্থীরা ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানিগুলো চিনত না। এখন এসব এক্সপোর মাধ্যমে তারা কোম্পানিগুলো সম্পর্কে জানতে পারছে। এটা নিঃসন্দেহে একটা ভালো দিক।

ফার্মা এক্সপোতে অংশগ্রহণের অনুভূতি জানাচ্ছেন গ্লোব্যাক্স ফার্মাসিউটিক্যালসের প্রতিনিধি

গ্লোব্যাক্স ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের প্রতিনিধি বলেন, আমি ফার্মেসি সেক্টরে প্রায় সাত বছর ধরে কাজ করছি। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, এ ধরনের এক্সপো ফার্মেসি কোম্পানি এবং ফার্মেসি শিক্ষার্থী—উভয়ের জন্যই উপকারী। এটা চাকরিপ্রত্যাশী এবং চাকরিদাতাদের মিলন মেলা। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালগুলোকেও এ ধরনের এক্সপোর আয়োজন করতে এগিয়ে আসা উচিত।

যত সেমিনার যত কর্মশালা

প্রথম দিন দুপুর দুইটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত ‘প্রফেশনাল এমপ্লয়াবিলিটি ইন ফার্মা সেক্টর’ শীর্ষক তিনটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। দুপুর দুইটা থেকে চারটা পর্যন্ত সেমিনার পরিচালনা করেন রেনেটা লিমিটেডের মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান নিসবাত আনোয়ার।

সেমিনার পরিচালনা করছেন রেনেটা লিমিটেডের মানবসম্পদ বিভাগে প্রধান নিসবাত আনোয়ার।

বিকেল চারটা থেকে পাঁচটা পর্যন্ত সেমিনার পরিচালনা করেন এসকায়েফ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের মানবসম্পদ ও বাণিজ্য বিভাগের পরিচালক মোস্তফা হাসান।

সেমিনার পরিচালনা করছেন এসকায়েফ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের মানবসম্পদ ও বাণিজ্য বিভাগের পরিচালক মোস্তফা হাসান

এরপর পাঁচটা থেকে ছয়টা পর্যন্ত সেমিনার পরিচালনা করেন বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের মানবসম্পদ ও প্রশাসন বিভাগের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. আনিসুর রহমান খান।

সেমিনার পরিচালনা করছেন বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের মানবসম্পদ ও প্রশাসন বিভাগের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. আনিসুর রহমান খান

দ্বিতীয় দিন সকাল নয়টা থেকে দুপুর বারোটা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭১ মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশে ফার্মেসি পণ্য ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক তিনটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সকাল নয়টা থেকে দশটা পর্যন্ত সেমিনার পরিচালনা করেন স্কয়ার ফার্মানিউটিক্যালস লিমিটেডের বিপণন বিভাগের জেনারেল ম্যানেজার আহমেদ কামরুল আলম।

সেমিনার পরিচালনা করছেন স্কয়ার ফার্মানিউটিক্যালস লিমিটেডের বিপণন বিভাগের জেনারেল ম্যানেজার আহমেদ কামরুল আলম

সকাল দশটা থেকে এগারোটা পর্যন্ত সেমিনার পরিচালনা করেন ইনসেপটা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের বিপণন কৌশল বিভাগের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।

সেমিনার পরিচালনা করছেন ইনসেপটা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের বিপণন কৌশল বিভাগের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান

এরপর এগারোটা থেকে বারোটা পর্যন্ত সেমিনার পরিচালনা করেন বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের প্রশিক্ষণ বিভাগের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক সায়মা সুলতানা।

সেমিনার পরিচালনা করছেন বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের প্রশিক্ষণ বিভাগের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক সায়মা সুলতানা

ফার্মাসিস্টদের এক সন্ধ্যা

ফার্মা এক্সপো সমাপনী দিনে এক নৈশভোজে মিলিত হয়েছিলেন মেলায় অংশ নেয়া এবং এর বাইরে বিভিন্ন শীর্ষস্থানীয় ফার্মেসি প্রতিষ্ঠানগুলোর উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। সেখানে তারা ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইউসুফ মাহবুবুল ইসলামের সঙ্গে নানা বিষয় নিয়ে আলোচনায় মেতে ওঠেন। যেমন সানোফি বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মঈন উদ্দিন মজুমদার বলেন, প্রতি বছর অনেক ফার্মেসি গ্রাজুয়েট বের হচ্ছে, কিন্তু আমরা যখন নিয়োগ দিতে যাই তখন সবচেয়ে সেরাজনকেই বেছে নিতে চাই। এই বাছাই প্রক্রিয়াতে ইউনিভার্সিটির সুনাম এক ধরনের প্রভাব ফেলে বলে মনে করি।

ফার্মা নাইটে নিজের মতামত তুলে ধরছেন সানোফি বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মঈন উদ্দিন মজুমদার

হামদর্দ ল্যাবরেটরিজ লিমিটেডের উৎপাদন বিভাগের ডেপুটি ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম আমিনুল ইসলাম বলেন, ফার্মেসি বিভাগের পাঠ্যক্রমে ব্যবস্থাপনার মৌলিক বিষয়গুলো অন্তর্ভূক্ত করা উচিত।

ফার্মা নাইটে নিজের মতামত তুলে ধরছেন হামদর্দ ল্যাবরেটরিজ লিমিটেডের উৎপাদন বিভাগের ডেপুটি ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম আমিনুল ইসলাম

এসকায়েফ ফার্মাসিউটিক্যালসের মাননিয়ন্ত্রণ বিভাগের পরিচালক মতিয়ার রহমান বলেন, ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থীই আমাদের প্রতিষ্ঠানে চাকরির জন্য ইন্টারভিউ দিয়েছেন। আমি দেখেছি, অন্যদের চেয়ে তুলনামূলকভাবে তারা এগিয়ে আছে। সাধারণত ইউনভার্সিটিগুলো মলিকুল রিসার্চ করে। তারপর সেটা বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রিকে দেয় যেন তারা পণ্য আকারে বাজারে আনতে পারে। আমাদের দেশে এখনো এই পদ্ধতি শুরু হয়নি। তবে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় যেভাবে ইন্ডাস্ট্রি ও একাডেমির মধ্যে সম্পর্ক স্থানের উদ্যোগ নিয়েছে তাতে অদূর ভবিষ্যতেই বাংলাদেশ মলিকুলার রিসার্চ শুরু হবে বলে আশা করা যায়।

ফার্মা নাইটে নিজের মতামত তুলে ধরছেন এসকায়েফ ফার্মাসিউটিক্যালসের মাননিয়ন্ত্রণ বিভাগের পরিচালক মতিয়ার রহমান

বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যলস লিমিটেডের প্রশিক্ষণ বিভাগের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক সায়মা সুলতানা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি সহশিক্ষা কার্যক্রমের দিকেও নজর দেয়া উচিত। যেমন তার নেতৃত্বগুণ, ব্যবস্থাপনা দক্ষতা, পরিস্থিতি সামলানোর ক্ষমতা, টিমওয়ার্ক ইত্যাদি।

ফার্মা নাইটে নিজের মতামত তুলে ধরছেন বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যলস লিমিটেডের প্রশিক্ষণ বিভাগের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক সায়মা সুলতানা

ফার্মাশিয়া লিমিটেডের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা তপন কুমার রায় বলেন, ইন্টারভিউ বোর্ডে যখন কোনো শিক্ষার্থীকে নিজের সম্পর্কে কিছু বলতে বলা হয় তখন সে বাবার নাম, দাদার নাম, বাড়ি কোথায়, ভাই-বোন কয়জন—এইসব বিষয় বলতে থাকে। কিন্তু চাকরিদাতারা এসব পারিবারিক গল্প শুনতে মোটেও আগ্রহী নয়। তারা চাকরিপ্রার্থীর জ্ঞান, দক্ষতা ও যোগ্যতা সম্পর্কে জানতে চায়।

ফার্মা নাইটে নিজের মতামত তুলে ধরছেন ফার্মাশিয়া লিমিটেডের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা তপন কুমার রায়

গ্লোব ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের উৎপাদন ও পণ্য উন্নয়ন বিভাগের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো. খায়রুল মামুন বলেন, বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে দেখেছি যে বায়ো প্রোডাক্ট টেস্ট সম্পর্কে অনেক শিক্ষার্থীদের মধ্যেই পর্যাপ্ত জ্ঞান বা ধারনা নেই। তাই আমি মনে করি এই বিষয়টি কোর্স কারিকুলামের অন্তর্ভূক্ত করা উচিত।

ফার্মা নাইটে নিজের মতামত তুলে ধরছেন গ্লোব ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের উৎপাদন ও পণ্য উন্নয়ন বিভাগের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো. খায়রুল মামুন

জেসন ফার্মাইসউটিক্যালস লিমিটেডের মানবসম্পদ ও প্রশাসন বিভাগের ব্যবস্থাপক মাজহার-উস-সালাম বলেন, চাকরির নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সাক্ষাৎগ্রহণের সময় দেখেছি অনেক শিক্ষার্থীই যা জানে তা গুছিয়ে বলতে পারে না। কিন্তু তার সিজিপিএ অনেক ভালো। আমি বলব, সিজিপিএর পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের ইন্টারপার্সোনাল স্কিল বাড়ানোর দিকেও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নজর দেয়া উচিত।

ফার্মা নাইটে নিজের মতামত তুলে ধরছেন জেসন ফার্মাইসউটিক্যালস লিমিটেডের মানবসম্পদ ও প্রশাসন বিভাগের ব্যবস্থাপক মাজহার-উস-সালাম

একমি ল্যাবরেটরিজ লিমিটেডের মানবসম্পদ বিভাগের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মো. আশিক হাসান বলেন, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করলে আমরা অনেক উচ্চমানসম্পন্ন ও সমৃদ্ধ বায়োডাটা পাই। কিন্তু ইন্টারভিউ বোর্ডে ওই বায়োডাটার প্রতিফলন পাই না। এমনকি নিজের সিভিতে কী লিখেছে সেটাও অনেক শিক্ষার্থী বলতে পারে না। এই বিষয়গুলোতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মনোযোগ দেয়া উচিত।

ফার্মা নাইটে নিজের মতামত তুলে ধরছেন একমি ল্যাবরেটরিজ লিমিটেডের মানবসম্পদ বিভাগের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মো. আশিক হাসান

ফার্মাশিয়া লিমিটেডের মানবসম্পদ ও প্রশাসন বিভাগের প্রধান মো. ফয়সাল আর ফেরদৌস বলেন, ফার্মেসি সেক্টর একটি জ্ঞানভিত্তিক সেক্টর। এখানে সববিষয়ে আপটুডেট জানাশোনা না থাকলে টিকে থাকা মুশকিল। কিন্তু ইন্টারভিউ বোর্ডে আমরা প্রচুর শিক্ষার্থী পাই যারা পৃথিবীর সর্বশেষ জ্ঞান সম্পর্কে ধারনা রাখে না। তারপর ইন্টারভিউ বোর্ডের সাধারণ আচরণ সম্পর্কেও দেখা অনেক অজ্ঞ। ক্যাজুয়াল ড্রেস পড়েই সাক্ষাৎকার দিতে চলে এসেছে কিংবা অনুমতি না নিয়েই চেয়ারে বসে পড়ছে ইত্যাদি। ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থীরা হয়ত এরকম নয়, কিন্তু সারা বাংলাদেশের চিত্রটা অনেকটা এরকমই।

ফার্মা নাইটে নিজের মতামত তুলে ধরছেন ফার্মাশিয়া লিমিটেডের মানবসম্পদ ও প্রশাসন বিভাগের প্রধান মো. ফয়সাল আর ফেরদৌস

অপসোনিন ফার্মা লিমিটেডের ডেপুটি ম্যানেজার তাজ মো. আগা মেনন বলেন, ফার্মেসির কোর্স কারিকুলামে মার্কেটিং বিষয়টিও যুক্ত করা দরকার। কারণ এই সেক্টরের ৪০ থেকে ৪৫ শতাংশ মানুষ বিপণনভিত্তিক কাজের সঙ্গে জড়িত থাকে। তাই গ্রাজুয়েট পর্যায়ে বিপণনের ওপর পড়াশোনা থাকলে কর্মজীবনে সেটা ভালো ফল দেয়।

ফার্মা নাইটে নিজের মতামত তুলে ধরছেন অপসোনিন ফার্মা লিমিটেডের ডেপুটি ম্যানেজার তাজ মো. আগা মেনন

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ফার্মেসি বিভাগের প্রধান মো. মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, শত ব্যস্ততার মাঝেও আপনা এখানে এসেছেন। এজন্য আমি ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।

এক নজরে ফার্মা এক্সপোতে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ

  • বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড
  • একমি ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড
  • ইনসেপটা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড
  • নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড
  • এসকায়েফ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড
  • হামদর্দ ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড
  • অপসোনিন ফার্মা
  • ফার্মাশিয়া লিমিটেড
  • জেসন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড
  • রেনেটা লিমিটেড
  • নিউটেক ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড
  • গ্লোবেক্স ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড
  • সানোফি ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড
  • বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড
  • পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড
  • জবসবিডি ডটকম
  • ইউনিমেড ইউনিহেলথ ম্যানুফেকচার্স লিমিটেড
  • বিএএসএফ কেমিক্যাল কোম্পানি
  • ওয়ান ফার্মা
  • ট্রেড কমিটমেন্ট
  • হার্ডসন ফার্মা
  • ইবনে সিনা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড

ছবিতে স্টল পরিদর্শনের মুহূর্ত

ডিআইইউ ফার্মা ক্যারিয়ার এক্সপোর স্যুভেনির

গণমাধ্যমে ফার্মা এক্সপো

নাজমুল হাসান পাপনের অনুপ্রেরণাদায়ী বক্তব্যের ভিডিও দেখুন : https://www.youtube.com/watch?v=mN6MdMCrzwE

মেজর জেনারেল মো. মোস্তাফিজুর রহমানের অনুপ্রেরণাদায়ী বক্তব্যের ভিডিও দেখুন : https://www.youtube.com/watch?v=luAY0UYqD4Y

উদ্বোধনী অনুষ্ঠান: https://www.youtube.com/watch?v=8cVTLABPxck

সমাপনী অনুষ্ঠান: https://www.youtube.com/watch?v=R4hTztfA5A4

সময় টেলিভিশনের সংবাদ ফুটেজ: https://www.youtube.com/watch?v=V8pmHCfpscA

সময় টেলিভিশনের আরও একটি সংবাদ ফুটেজ: https://youtu.be/IqyP29FUYmU

জিটিভির সংবাদ ফুটেজ: https://www.youtube.com/watch?v=tRkI5Tuctd8

এটিএন বাংলার সংবাদ ফুটেজ: https://www.youtube.com/watch?v=KtpHIZVQ3Ks

যমুনা টেলিভিশনের সংবাদ ফুৃটেজ: https://www.youtube.com/watch?v=M_06ZzpK_Rg&feature=youtu.be

দুই দিনের ফার্মা ক্যারিয়ার এক্সপোর সংক্ষিপ্ত ভিডিও: https://www.youtube.com/watch?v=_NuAdf4yQWE&feature=youtu.be

 

 

Sharing is caring!

Leave a Comment