‘অ্যাপ্রেন্টিসশিপ ফ্যামিলি নাইট’

‘অ্যাপ্রেন্টিসশিপ ফ্যামিলি নাইট’

  • ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

গতকালের (৩ সেপ্টেম্বর) রাতটা নিঃসন্দেহে খোদাই হয়ে থাকবে ওদের মনে। ওরা মানে কামরুন নাহার, ইফতেখার পলাশ, নিগার সুলতানা, জাকির হোসেইন, আরিফুল ইসলাম, ফারুক মিয়া, রিয়াদ মিয়া, আল শাফায়াত, তাজিম তাবাসসুম, ইমরোজ ভুঁইয়া, সালাউদ্দিন মোরসালীন, সুমাইয়া ইসলাম, মিরাজ ইসলাম ও নাফিজা রহমান মৌ। ১৪ জন তরুণ-তরুণী। তাঁদের নতুন পরিচয় শিক্ষানবীশ।

শিক্ষানবীশ ও অভিভাবকদের সামনে বক্তব্য দিচ্ছেন মো. সবুর খান।
শিক্ষানবীশ ও অভিভাবকদের সামনে বক্তব্য দিচ্ছেন মো. সবুর খান।

এই চৌদ্দ শিক্ষানবীশ ও তাদের পরিবারের সঙ্গে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ও শিক্ষকরা গতকাল রাতে মিলিত হয়েছিলেন এক অনুষ্ঠানে। ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকুয়েট হলে অনুষ্ঠিত সে অনুষ্ঠানের নাম ‘অ্যাপ্রেন্টিসশিপ ফ্যামিলি নাইট’।

‘এমন অনুষ্ঠানে এর আগে অংশ গ্রহণ তো দূরের কথা, নামই শুনিনি কখনো’ বলছিলেন এক অভিভাবক। এই অভিভাবকের সঙ্গে গল্প জুড়ে দেন নিগার সুলতানা নামের এক অ্যাপ্রেন্টিস। ‘শুনবেন কী করে আন্টি, এমন আয়োজন তো এর আগে কেউ করেনি’ বলতে শুরু করেন নিগার। তিনি সেই অভিভাবককে বুঝিয়ে বলেন, ‘শিক্ষানবিশ প্রকল্প নামে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশে একটি নতুন ধারনা চালু করেছে। এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য হচ্ছে, সদ্য পাশ করে বের হওয়া গ্র্যাজুয়েটরা যেন পেশাগত জীবনে প্রবেশের পূর্বে দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে নিজেকে উন্নয়ন করতে সক্ষম হয়। এই কর্মসূচির আওয়াতায় আমরা চৌদ্দজন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি এবং ড্যাফোডিল পরিবারের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অধীনে শিক্ষানবীশ হিসাবে কাজ করব।’

অভিভাবক আন্টি স্মিত হেসে বলেন, ‘খুবই ভালো উদ্যোগ। এমন উদ্যোগ অন্য সব প্রতিষ্ঠান কেন গ্রহণ করে না?’

এ প্রশ্নের আসলে উত্তর নেই। নিগার এগিয়ে যান ব্যাংকুয়েট হলের প্রধান ফটকের দিকে। দল বেঁধে মিলনায়তনে প্রবেশ করছেন শিক্ষানবীশ ও তাদের পরিবারের সদস্যরা। ঘড়ির কাঁটা তখন রাত আটটা ছুঁই ছুঁই। আসতে শুরু করেছেন শিক্ষকরাও।

হঠাৎ ‘নিগার, এই নিগার’ ডাক শুনে পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখেন তাকে ডাকছেন নাফিজা রহমান মৌ। তিনিও শিক্ষানবীশ। অ্যাপ্রেন্টিসশিপের বাছাইপর্বে বিভিন্ন কর্মশালায় অংশ নিতে হয়েছিল তাদের। রাজধানীর অদূরে আশুলিয়ায় অবস্থিত ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসে হয়েছিল সেসব কর্মশালা। তখন মৌয়ের সঙ্গে নিগারের ভালো বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে।

নিজের মতামত তুলে ধরছেন এক অভিবাবক।
নিজের মতামত তুলে ধরছেন এক অভিবাবক।

ওদিকে মিলনায়তনের এক কোণায় আড্ডায় মেতে উঠেছেন সালাউদ্দিন, সুমাইয়া ও মিরাজ। বাদ নেই কামরুন নাহার, ইফতেখার, জাকির ও আরিফুল। অভিভাবকরাও নানা বিষয় নিয়ে আলোচনায় মেতে ওঠেন নিজেদের মধ্যে। খানিকবাদে স্টুডেন্ট অ্যাফেয়ার্সের পরিচালক মিজানুর রহমান রাজুর সঞ্চালনায় শুরু হয় মূল অনুষ্ঠান। অ্যাপ্রেন্টিসরা জানান তাদের অভিজ্ঞতার কথা। অভিভাবকরাও জানান তাদের নিজ নিজ মতামত।

এভাবেই স্মৃতির পাটাতনে খোদাই হয়ে যায় একটি রাত।

উল্লেখ্য, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি কর্তৃক প্রবর্তিত এপ্রেনটিসশিপ প্রজেক্ট ২০১৬ এর বাছাই প্রক্রিয়া শুরু হয়  গত ১৬ জুনে, যেখানে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রায় ৫০০ সাবেক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। পরবর্তীতে ধাপে ধাপে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে শেষ পর্বের জন্য ৫১ জন নির্বাচিত হন। সেখান থেকে পরবর্তীতে ১৪ জনকে চুড়ান্ত ভাবে নির্বাচন করা হয় যারা আগামী তিন মাস চাকরির পাশাপাশি পর্যায়ক্রমে ড্যাফোডিল পরিবারের বিভিন্ন অঙ্গ প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করবেন।

চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত এই চৌদ্দজন ও তাদের পরিবার নিয়েই গতকাল অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ‘অ্যাপ্রেন্টিসশিপ ফ্যামিলি নাইট’। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. সবুর খান। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইউসুফ এম ইসলামসহ অন্যান্য শিক্ষকরাও উপস্থিত ছিলেন।favicon59

Sharing is caring!

Leave a Comment