স্বপ্নবাজ তরুণী মীম

স্বপ্নবাজ তরুণী মীম

  • ক্যাম্পাস ডেস্ক

ইতোমধ্যেই এক ডজন বই লিখে ফেলেছে মীম নোশিন নাওয়াল খান, টানা কয়েকবার জিতে নিয়েছে মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড। সদ্য স্কুল পেরুনো মীম এবার ভিকারুন্নিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসিতে পেয়েছে গোল্ডেন জিপিএ ৫! একাধারে সব কূল বজায় রেখে এগিয়ে চলা মীমের গল্প শুনুন এই প্রতিবেদনে।


হীরক রাজ্যের বাসিন্দা না হয়েও মীমের প্রথম কথা বলা শুরু ছন্দের সঙ্গে তাল মিলিয়ে। স্কুলে ভর্তি হওয়ার আগেই ছন্দ মিলিয়ে ছড়া লিখে ফেলেছেন। দু-চার লাইনের সেই লেখাগুলোই ছোট্ট মীমের প্রথম অনুপ্রেরণা। আর একটু বড় হতেই পত্রিকাগুলোতে বেরুতে থাকে তার লেখা ছোট গল্প। সবাই অবাক হতেন, এত্ত ছোট মেয়েটা কত্ত সুন্দর করে তার মনের কথা গুছিয়ে লিখে ফেলছে। আর এই লেখালেখির প্রতি ভালোবাসা তাকে গ্রন্থপ্রকাশে অনুপ্রাণিত করে। ২০০৯ সালে তার প্রথম বই ‘কনকচাঁপা’ প্রকাশিত হয়।

ক্লাস টু-তে পড়াকালীন তিনি লিখেছিলেন তার জীবনের প্রথম গল্প ‘বুকের ভিতর স্বপ্ন’। পরের বছর সেটা মাসিক সবুজ পাতায় ছাপা হলো আর তার পরের বছর ২০১০ সালে তিনি সেটার জন্য পেয়ে গেলেন মিনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডস ২০১০-এর প্রিন্ট মিডিয়া-অনূর্ধ্ব ১৮ বিভাগের প্রথম পুরস্কার। পরের বছরও তিনি অন্যতম সেরা নির্বাচিত হন। আগের বছর তার লেখা দ্বিতীয় গল্পটি ঐতিহ্য গোল্লাছুট গল্প লেখা প্রতিযোগিতা ২০০৯-এর অন্যতম সেরা গল্প হয়েছিল। এরপরেও টানা কয়েক বছর মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড পান মীম, শিশুসাহিত্যে তার পদচারণার এই তো প্রমাণ।

লেখালেখি ছাড়াও মীমের ঝোঁক রয়েছে ছবি তোলার দিকে। আর ছবি তুলে বেশ কিছু পুরস্কার এরমধ্যে তার ঝুলিতে এসেছে। ছবি আঁকাতেও দারুণ পটু মীম আর্ট স্কুলে বরাবরই ছিলেন ফার্স্ট গার্ল। মজার বিষয় হলো তার দুটো বইয়ের প্রচ্ছদও তার করা। অবসরে গয়না, শো-পিস, ফুলদানি, কলমদানিসহ অনেক রকম জিনিস বানাতে বসে যান তিনি।

মীম তার অল্প সময়ের অভিজ্ঞতার আলোকেই বলেন, ‘একজন মানুষের সাফল্যের রহস্য শুধু তার প্রাণপণ চেষ্টা নয়, বরং তার ভালোলাগা, ভালোবাসা নিয়ে কাজ করা, মনের কথা শোনা এবং স্বপ্ন দেখার সাহসের মাঝে লুকিয়ে থাকে। কারো কাছে যদি লেখালেখি ভালো না লাগে, জোর করে লিখতে চেষ্টা করে উল্টো ফল হবে, হারিয়ে যাবে তার নিজের প্রতিভা। বরং তার উচিত তার ভালোবাসার জায়গা নিয়ে কাজ করা।’ এত সৃজনশীল কাজে জড়িত থাকার পরেও মীম পড়াশোনাটা চালিয়ে গেছেন সমান তালে। প্রতিযোগিতার এই সময়েই শুধু স্কুল আর বাসার আঙ্গিনাতেই তার লেখাপড়াটা দিব্যি চলছে। আর তার মা ও বাবার অবদানও এক্ষেত্রে কম নয়। তিনি মনে করেন, সময় করে নিজের পড়াশোনাটা করেই ফেলা যায়, বাড়তি চাপের কোনো দরকার নেই। আর স্বপ্নবাজ এই তরুণী লেখালেখির জগতে কোনো ছকে ফেলতে চান না নিজেকে। যতদিন মনের টানে লিখতে পারবেন, লিখে যেতে চান। তার খুব শখ বিজ্ঞানী হয়ে নতুন নতুন আবিষ্কারের নেশায় মাতাবেন নিজেকে।

সূত্র: ইত্তেফাকfavicon59-4

Sharing is caring!

Leave a Comment